বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থানগড় থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে বিহার গ্রামে প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ভাসু বিহার (Vasu Vihara) অবস্থিত। বগুড়ার স্থানীয় বাসিন্দারা নাগর নদীর পশ্চিমের এই জায়গাটিকে নরপতির ধাপ হিসেবে চিনেন। ভাসু বিহার থেকে গুপ্তযুগের দুইটি আয়তাকার বৌদ্ধ বিহার ও ক্রুশাকৃতি মন্দির আবিষ্কৃত হয়েছে।
১৯৭৩ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ভাসু বিহারে প্রথম খনন কাজ করা হয়। খননের মাধ্যমে এখান থেকে দুইটি মধ্যম আকৃতির সংঘরাম, একটি মন্দিরের আংশিক অবকাঠামো এবং প্রায় ৮০০ টির মতো মুল্যবান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন খুঁজে পাওয়া যায়। এদের মধ্যে ছোট মূর্তি, ব্রোঞ্জের বৌদ্ধ মূর্তি, পোড়ামাটির ফলক, সিলমোহর, মুল্যবান পাথরের গুটিকা, নকশাকৃত ইট, ফলক ও মাটির প্রদীপ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ভাসু বিহারকে বৌদ্ধ সংঘারামের ধ্বংসাবশেষ হিসাবে মনে করা হয়। এখান থেকে আবিষ্কৃত বড় ও ছোট সংঘারামটির অবকাঠামো প্রায় একই রকম। এতে রয়েছে ২৬ টি কক্ষ, চারদিকে ঘোরানো বারান্দা ও প্রবেশ পথ। চীনের বিখ্যাত পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ এই স্থানকে “পো-শি-পো” বা “বিশ্ব বিহার” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এক সময় ভাসু বিহার বৌদ্ধদের গুরত্বপূর্ণ ধর্মীয় বিদ্যাপীঠ হিসেবে পরিচিত ছিল।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে ভাসু বিহারে যাওয়ার জন্য প্রথমে বগুড়া শহরে যেতে হবে। ঢাকা থেকে বাস, ট্রেন বা নিজস্ব পরিবহনে বগুড়া যেতে পারবেন। ঢাকার গাবতলী, মহাখালী, শ্যামলী, আব্দুল্লাপুর ও কল্যানপুর থেকে বগুড়া যাওয়ার বিভিন্ন বাস রয়েছে। আবার ঢাকার কমলাপুর থেকে ট্রেনে লালমনি বা রংপুর এক্সপ্রেসে বগুড়া যেতে পারবেন। বগুড়া থেকে ভাসু বিহারের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। বগুড়া শহর থেকে সিএনজি বা অটো রিকশায় গোকুল মেধ রোড দিয়ে বীর শ্রেষ্ঠ স্কোয়ারে ঢুকে ভাসু বিহার যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন
বগুড়ায় অবস্থিত আবাসিক হোটেলের মধ্যে মম ইন, হোটেল নাজ গার্ডেন, পর্যটন মোটেল, সেফওয়ে মোটেল, সেঞ্ছুরি মোটেল, মোটেল ক্যাসেল উল্লেখযোগ্য।
কোথায় খাবেন
বগুড়া শহরে সাথী হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, মায়ের দোয়া হোটেল, অতিথি গার্ডেন রেস্টুরেন্ট, চাপ কর্নার ও হোটেল সাফিনার মতো বেশকিছু রেস্টুরেন্ট আছে। তবে অবশ্যই বগুড়া শহরের বিখ্যাত দইয়ের স্বাদ নিতে ভুল করবেন না।
অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
বগুড়ার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে মহাস্থানগড়, খেরুয়া মসজিদ, গোকুল মেধ, রানী ভবানীর পিতৃালয় ও ভীমের জাঙ্গাল উল্লেখযোগ্য।
ফিচার ইমেজ: সেলিম রানা
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।