তিস্তা ব্যারেজ (Teesta Barrage) বা তিস্তা সেচ প্রকল্প বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহত্তম সেচ প্রকল্প। তিস্তা নদীর উপর নির্মিত তিস্তা ব্যারেজের একপাশে আছে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলাধীন গড্ডিমারী ইউনিয়নের দোয়ানী গ্রাম এবং অন্য পাশে আছে নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলাধীন খালিসা চাপানী ইউনিয়নের ডালিয়া নামক স্থান। রংপুর, দিনাজপুর, নিলফামারী ও বগুড়া জেলার অনাবাদী জমিতে সেচ সুবিধা প্রদানের জন্য ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন সরকার তিস্তা ব্যারেজ তৈরীর পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে ৬১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪৪ রেডিয়াল গেট বিশিষ্ট ব্যারেজের নির্মাণ কাজ শুরু হয়, যা ১৯৯০ সালে শেষ হয়।

তিস্তা ব্যারেজের নদীর দুই পাশে গড়ে তোলা হয়েছে সবুজ বেষ্টনি। এছাড়াও ব্যারেজ এলাকায় রয়েছে কয়েকটি পিকনিক স্পট। ব্যারেজের কালো পিচের রাস্তা ধরে ছুটে চলা কিংবা চারপাশের পরিবেশের মনভোলানো সৌন্দর্য্য এখানে আগত দর্শনার্থীদের এক অলৌকিক মায়ায় কাছে টানে।

কিভাবে যাবেন

রাজধানী ঢাকা কিংবা অন্য শহর থেকে তিস্তা ব্যারেজ যেতে চাইলে আপনার সুবিধা মত নীলফামারী অথবা লালমনিরহাট জেলায় চলে যান। নীলফামারী থেকে তিস্তা পাড়ে যাওয়ার জন্য রিক্সা, স্কুটার এবং মোটরসাইকেল ভাড়ায় পাবেন।

আর ঢাকা থেকে লালমনিরহাট যাওয়ার জন্য বাস অথবা ট্রেনকে বেছে নিতে পারেন। কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে শুক্রবার ছাড়া বাকি ৬ দিন রাত ০৯ঃ৪৫ মিনিটে লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রা করে। আসনভেদে ট্রেনের টিকেটের মূল্য পরবে ৫০৫ থেকে ১৭৮১ টাকা। এছাড়া গাবতলী এবং কল্যাণপুর থেকে নাবিল পরিবহন, এস আর ট্রাভেলস, মানিক এক্সপ্রেস, বরকত ট্রাভেলস, হানিফ, শাহ্‌ আলি পরিবহনের বাস লালমনিরহাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এসি/নন-এসি বাসের জনপ্রতি ভাড়া লাগবে ৭৫০-১২৫০ টাকা। লালমনিরহাট সদর হতে সড়কপথে তিস্তা ব্যারেজ যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের যানবাহন রয়েছে।

কোথায় থাকবেন

তিস্তা ব্যারেজের পাশে রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত অবসর রেস্ট হাউজ। যদিও এই রেস্ট হাউজ সকলের জন্য উন্মুক্ত নয় তবে কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে এখানে রাত্রিযাপন করা যায়। এছাড়া রাত্রিযাপনের সুবিধার্থে আপনাকে নীলফামারি অথবা লালমনিরহাট জেলায় চলে যেতে হবে।

কোথায় খাবেন

তিস্তা ব্যারেজের কাছে বেশকিছু খাবার হোটেল/রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এদের মধ্যে রাহমানিয়া হোটেল এন্ড ফুড কর্ণার, মুহাম্মাদিয়া হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্ট, বিসমিল্লাহ হোটেল এন্ড রেঁস্তোরা, টাঙ্গাইল মিস্টি ঘর, মাতৃ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য।

ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে

ম্যাপে তিস্তা ব্যারেজ

শেয়ার করুন সবার সাথে

ভ্রমণ গাইড টিম সব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানান অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ পাতায় যোগাযোগ করুন।
দৃষ্টি আকর্ষণ : যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই ভ্রমণ গাইডে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ও নানা রকম যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যে ভ্রমণ গাইড দায়ী থাকবে না।