রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ৩২ কিলোমিটার দূরে মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলায় জগদীশ চন্দ্র বসুর পৈতৃক বসতবাড়িকে ঘিরে জগদীশ চন্দ্র বসু স্মৃতি জাদুঘর কমপ্লেক্সটিকে সাজানো হয়েছে। প্রায় ৩০ একর আয়তনের এই বাড়িতে অসংখ্য বৃক্ষরাজির ছায়াময় প্রকৃতির মাঝে বিভিন্ন পশুপাখির ম্যুরাল, কৃত্রিম পাহাড়-ঝরনা, শান বাঁধানো পুকুর ঘাট এবং দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য ত্রিকোণাকৃতির ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। জগদীশ চন্দ্র বসু স্মৃতি জাদুঘরে জগদীশ চন্দ্র বসুর পোর্ট্রেট, বিভিন্ন গবেষণাপত্র, হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল প্রাপ্তিতে লেখা চিঠি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পাঠানো চিঠি এবং ১৭টি দুর্লভ ছবি প্রদর্শনের জন্য রাখা আছে।
বাংলাদেশের প্রথম সফল বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু ১৮৫৮ সালের ৩০ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর সমৃদ্ধ শিক্ষা জীবনের একপর্যায়ে ১৮৮০ সালে চিকিৎসা শাস্ত্র অধ্যয়নের উদ্দেশ্যে লন্ডন গমন করেন। কিন্তু তিনি পদার্থ, রসায়ন ও উদ্ভিদ শাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে ১৮৮৪ সালে দেশে ফিরে আসেন। মহান এই বিজ্ঞানী জীবিত অবস্থায় তাঁর সমস্ত সম্পত্তি জনকল্যাণে দান করে গেছেন। ১৯২১ সালে তাঁর জমিতে সুরুজ বালা সাহা বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে স্যার জগদীশ ইনস্টিটিউশন (Sir JagadishChandra Bose Institution) ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১১ সালে জগদীশ ইনস্টিটিউশনের উদ্যোগে জগদীশ চন্দ্র বসু কমপ্লেক্স বাস্তব রূপ লাভ করে। ১৯৩৭ সালের ২৩ নভেম্বর এই মহান কীর্তিমানের বর্ণাঢ্য জীবনাবসান হয়।
কিভাবে যাবেন
ঢাকার গোলাপ শাহ মাজারের কাছ থেকে ঢাকা-দোহার রুটে চলাচলকারী বাসে চড়ে রাড়িখাল তিন দোকানের সামনে নেমে রিকশা ভাড়া করে জগদীশ চন্দ্র বসু কমপ্লেক্স যাওয়া যায়। এছাড়া ঢাকার পোস্তাগোলা ব্রীজ হতে মাওয়াগামী যেকোন বাসে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর বাজারে নেমে ইজিবাইক নিয়ে রাড়ীখাল গ্রামে অবস্থিত জগদীশ চন্দ্র বসু কমপ্লেক্স যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
ঢাকা হতে জগদীশ চন্দ্র বসু স্মৃতি জাদুঘর দেখে দিনে দিনেই ফিরে আসা যায়। তবে প্রয়োজনে রাত্রিযাপন করতে হলে জাদুঘরের কাছে মৃধা আবাসিক হটেল কিংবা মাওয়া ঘাট সংলগ্ন পদ্মা রিসোর্টকে বেছে নিতে পারেন।
ফিচার ইমেজ: অনিক সরকার
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।