ঢাকা হতে দিনে গিয়ে দিনে ঘুরে আসা যায় এমন স্থানের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবদি (Sabdi) একটি আকর্ষণীয় ভ্রমণ স্থান। শীতকালে সাবদি গ্রামের ফসলের ক্ষেতগুলো হলুদ সরিষা ফুলে ভরে উঠে। এছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসে এখানে গোলাপ, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, জারবেরা, কসমস, ডেইজি জিপসি, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের ফুলের চাষ করা হয়। সমগ্র গ্রাম বাহারি ফুলের রঙে রঙিন হয়ে উঠে। ফুল চাষকে ঘিরে চলে গ্রামের চাষীদের ব্যস্ততা। তখন সাবদি গ্রামে প্রকৃতিপ্রেমী দর্শনার্থীদের পদচারণা বৃদ্ধি পায়। দিগন্তজোড়া ফুলের রাজ্য থেকে সূর্যাস্তের দৃশ্যের অপূর্ব সৌন্দর্য ভ্রমণকারীদের মুগ্ধ করে।
ফুলের গ্রাম সাবদি-তে সময় কাটানোর জন্য আরও আছে প্রেমতলা, কদম রসুল দরগা, সিরাজ শাহর মাজার কমপ্লেক্স, সোনাকান্দা দুর্গ, ছোট একটি পার্ক এবং লক্ষ্মণবন্দে নদীর পাড়। চাইলে নদীতে নেমে শরীর জুড়িয়ে নিয়ার পাশাপাশি নৌকায় চড়ে চারপাশ ঘুরে দেখতে পারবেন।
কিভাবে যাবেন
সাবদি যাওয়ার জন্য প্রথমে গুলিস্থানের বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেইট কিংবা বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সামনে থেকে উৎসব, শীতল, বন্ধন বা বিআরটিসির এসি/নন-এসি বাসে নারায়ণগঞ্জের চাষারা অথবা বন্দরের ২ নাম্বার ঘাটের কাছে চলে আসুন। চাষারা নামলে রিকশা বা অন্য পরিবহণে লঞ্চ ঘাটে আসতে হবে। লঞ্চ ঘাটে এসে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় নদী পার হয়ে অটো/ইজিবাইক রিজার্ভ নিয়ে সহজেই ফুলের গ্রাম সাবদি সহ আশেপাশের অন্য সকল দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখতে পারবেন।
এছাড়া যদি নিজস্ব পরিবহণ বা প্রাইভেট কারে চড়ে সাবদি যেতে চান তবে কাঁচপুর ব্রিজ অতিক্রম করে মদনপুর হয়ে বন্দর সদর রোড ধরে ৮ কিলোমিটার এগিয়ে গেলেই সাবদি গ্রামে পৌঁছে যাবেন।
একদিনের ট্যুর প্ল্যান
সকাল ১০টার মধ্যে নারায়ণগঞ্জ অবস্থান করার চেষ্টা করুন। নদী পার হয়ে নিজের ইচ্ছে মতো একে একে সাবদি গ্রামের সকল দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখে ফেলুন। এরপর আপনার সর্বশেষ অবস্থান থেকে দুপুর ২টা থেকে ৩টার মধ্যে নদী পাড়ে চলে আসুন। বিখ্যাত মাওরা হোটেলে গরু ভুনা আর কচু শাক দিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে নিন। খাওয়া দাওয়া সেরে বিকেল বেলা কাটিয়ে দিতে পারেন নদী পাড়ের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেখতে। আর অবশ্যই বোস কেবিনের কাটলেট খেতে ভুলবেন না।
কোথায় খাবেন
সাবদি গ্রামে প্রতি শুক্রবার সকালে নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক খাবার বৌয়া (এক ধরনের ভাত) পাওয়া যায়। যা বিভিন্ন ধরনের ভর্তার সাথে খেতে খুবই সুস্বাদু। দুপুর বেলা বিখ্যাত মাওরা হোটেলের গরু ভুনা ও কচু শাক দিয়ে ভাত খেতে পারেন। এছাড়া সাবদি বাজারের সুরভি হোটেলে বিভিন্ন পদের ভর্তা ভাজি পাওয়া যায়। আর অবশ্যই বোস কেবিনের কাটলেট খেতে ভুলবেন না।
সতর্কতা
- সৌন্দর্য উপভোগ করতে গিয়ে যেন ফুল চাষীদের কোন ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
- আপনার ব্যবহৃত বর্জ্য যত্রতত্র ফেলে পরিবেশের ক্ষতি করবেন না।
- স্থানীয়দের সাথে ভদ্র ব্যবহার করুন।
ফিচার ইমেজ: মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।