ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী জয়ন্তী নগর গ্রামে ব্যাক্তিগত উদ্যোগে পরশুরাম রাবার বাগান (Rubber Garden) গড়ে তোলা হয়েছে। ২০১০ সালে হাজী মোঃ মোস্তফা প্রায় ২৫ একর জায়গা জুড়ে ৮,০০০ রাবার গাছ রোপণের মাধ্যমে এই বাগান প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে দীর্ঘ ৮ বছর পরিচর্চার মাধ্যমে ২০১৮ সালে এই রাবার বাগান থেকে প্রথম কষ আরোহণ শুরু হয়।
রাবার গাছের কষ সংগ্রহের জন্য গাছের গোড়া থেকে ৭০-৭৫ সে.মি উপরে কাটা অংশের নীচে মাটির বাটি বসানো হয়। রাবার বাগান থেকে কষ সংগ্রহ করে শুকনো রাবার শিটে পরিণত করতে সাতদিন সময় লাগে। এই প্রক্রিয়া শেষে রোলার মেশিনের সাহায্যে কষ থেকে পানি বের করে ড্রিপিং শেডে শুকিয়ে ধুমঘরে পোড়ানো হয়। সাধারণত রাবার গাছ থেকে ৩০-৩২ বছর পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্নভাবে কষ সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। সারি সারি এই রাবার গাছ ও রাবার প্রক্রিয়াজাতকরণ দেখতে প্রতিদিনই অসংখ্য দর্শনার্থী পশুরাম রাবার বাগানে আসেন।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে শ্যামলী, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন, এস আলম, কেয়া ও সৌদিয়া বাসে ফেনী (Feni) যেতে পারবেন। এছাড়া কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে মহানগর গোধূলি, তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনে ফেনী আসতে পারবেন। ফেনী জেলা থেকে সিএনজি, ইজিবাইকের মত স্থানীয় যানবাহনে পরশুরাম উপজেলা হয়ে রাবার বাগানে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
ফেনী জেলার উল্লেখযোগ্য আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল বিলাস, হোটেল আল করিম, হোটেল গাজী ও হোটেল মিড নাইট অন্যতম।
কোথায় খাবেন
পরশুরাম উপজেলায় হালকা চা-নাস্তার দোকান রয়েছে। এছাড়া ফেনী শহরে বাঙ্গালী খাবারের অসংখ্য রেস্টুরেন্ট রয়েছে। ফেনীর জনপ্রিয় খাবারের মধ্যে চালের সেমাই, মহিষের দুধের ঘি, তিলের তৈরি বিভিন্ন মিষ্টান্ন ও খন্ডলের মিষ্টি অন্যতম।
ভ্রমণ পরামর্শ
- সাধারণত অক্টোবর থেকে জানুয়ারি মাস রাবার উৎপাদনের ভরা মৌসুম। এই চার মাস রাবার বাগানে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত সময়।
- ব্যাক্তিগত মালিকানাধীন এই বাগানে ঢুকতে হলে মালিক পক্ষের অনুমতি নিতে হবে।
- রাবার প্রক্রিয়াজাতকরন দেখার সময় উত্তপ্ত চুল্লির কাছে যাবেন না। চুল্লিতে সবসময় আগুন থাকে।
- রাবার বাগানের ভিতরে কোন দাহ্য পদার্থ যেমনঃ দিয়াশলাই, বিড়ি-সিগারেট এই ধরণের কোন কিছু নিবেন না। কারণ শীত ও বর্ষাকালে প্রকৃতির শুষ্কতার কারণে বাগানে অঘটন ঘটার সম্ভাবনা থাকে।
- বাগান থেকে কাছেই কাটা তারের বেড়া দিয়ে ঘেরা ভারতের সীমান্ত ও পরশুরাম রিজার্ভ ফরেস্ট। তাই ট্র্যাকিংয়ের প্রস্তুতি নিয়ে গেলে চাইলে ট্র্যাকিংও করতে পারবেন।
- বাগানের ভিতরে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না।
ফেনী জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
ফেনী জেলায় রাজাঝির দীঘি, শমসের গাজীর বাঁশের কেল্লা, শমসের গাজীর দীঘি, প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি ও আব্দুস সালাম স্মৃতি জাদুঘরের মতো উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় রয়েছে।
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।