রামগোপালপুরের জমিদার যোগেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরীর পুত্র শৌরীন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী ১২৯৩ বঙ্গাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। শৌরীন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী গৌরীপুর ও তৎসন্নিহিত এলাকার জমিদারদের ইতিহাস নিয়ে ‘বারেন্দ্রবাহ্মণ জমিদার’ নামক গ্রন্থ রচনা করে সুনাম অর্জন করেন। ধারণা করা হয়, ১৮৫০ শতকে রামগোপালপুর জমিদার বাড়ি (Ramgopalpur Zamidar Bari) নির্মাণ করা হয়েছিল। যদিও রামগোপালপুর জমিদার বংশের মূল প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। গৌরীপুরের জমিদারির বয়স প্রায় দেড়শ বছর হলেও ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাজনের সময় গৌরীপুরের অধিকাংশ জমিদার দেশ ত্যাগ করেন। ফলে কালের বিবর্তণে পরিচর্যার অভাবে রামগোপালপুর জমিদার বাড়ির ঐতিহ্যও বিলুপ্তির পথে।

একসময় জৈলুশপূর্ণ রামগোপালপুর জমিদার বাড়ির চিড়িয়াখানা, বাগানবাড়ি, রঙ্গম, সাগরদিঘি, কারুকার্যময় পুকুর ঘাট এবং ৩ তলা বিশিষ্ট তোরণ বর্তমানে কেবলই স্মৃতি। জমিদার বাড়ির দুইটি প্রবেশ দ্বার, ধ্বংসপ্রাপ্ত দেয়াল এবং মন্দির ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই। জমিদার বাড়ির মন্দিরে এখনো বিভিন্ন পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে রামগোপালপুর জমিদার বাড়ি যাওয়ার জন্য প্রথমে বাস বা ট্রেনে ময়মনসিংহ জেলা শহরে আসতে হবে। ময়মনসিংহ থেকে বাস বা সিএনজিতে কিশোরগঞ্জগামী রোড ধরে রামগোপালপুর বাজারে এসে স্থানীয় যে কাউকে জিজ্ঞাস করলে রামগোপালপুর জমিদার বাড়ির রাস্তা দেখিয়ে দেবে।

ঢাকা থেকে এনা, আলম এশিয়া, শামীম এন্টারপ্রাইজ, শৌখিন কিংবা নিরাপদ পরিবহনের বাসে করে ২৬০ টাকা ভাড়ায় ময়মনসিংহ যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ যেতে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগে।

ঢাকা থেকে ট্রেনে ময়মনসিংহ ভ্রমণ করতে চাইলে তিস্তা এক্সপ্রেস (সকাল ৭ঃ৩০), মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস (দুপুর ০১ঃ১৫), যমুনা এক্সপ্রেস (বিকেল ০৪ঃ৪৫), ব্রহ্মপুত্র (সন্ধ্যা ০৬ঃ১৫) এবং হাওর এক্সপ্রেস (রাত ১০ঃ১৫) এইসব ট্রেনের যে কোনটায় আপনার সময় ও পছন্দমত ট্রেনে সরাসরি ময়মনসিংহ যেতে পারবেন। শ্রেণীভেদে ভাড়া ১২০ থেকে ২৭১ টাকা। যেতে সময় লাগবে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা।

কোথায় থাকবেন

ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেলের মধ্যে আমির ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল মুস্তাফিজ, হোটেল সিলভার ক্যাসেল, হোটেল হেরা, হোটেল খাঁন ইন্টারন্যাশনাল, নিরালা রেস্ট হাউস, হোটেল ঈশা খাঁ, হোটেল উত্তরা, তাজমহল ইত্যাদি অন্যতম।

কোথায় খাবেন

গৌরিপুর উপজেলায় বেশকিছু স্থানীয় খাবারের হোটেল রয়েছে। এছাড়া ময়মনসিংহ শহরে প্রেসক্লাব ক্যান্টিনের মোরগ পোলাও, হোটেল ধানসিঁড়ি ও সারিন্দার খাবারের বেশ সুনাম রয়েছে।

ময়মনসিংহ জেলার দর্শনীয় স্থান

ময়মনসিংহ জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে আলেকজেন্ডার ক্যাসেল, মুক্তাগাছা জমিদার বাড়ি, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালা, শশী লজ, ময়না দ্বীপ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

ফিচার ইমেজ: সুজন কুমার দেবনাথ

ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে

ম্যাপে রামগোপালপুর জমিদার বাড়ি

শেয়ার করুন সবার সাথে

ভ্রমণ গাইড টিম সব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানান অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ পাতায় যোগাযোগ করুন।
দৃষ্টি আকর্ষণ : যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই ভ্রমণ গাইডে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ও নানা রকম যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যে ভ্রমণ গাইড দায়ী থাকবে না।