মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার খালিয়ায় রাজা রামমোহন রায়ের বাড়ি হিসেবে পরিচিত ঐতিহাসিক খালিয়া জমিদার বাড়ির (Khalia Zamidar Bari) অবস্থান। প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো এই বাড়িটি উজানির জমিদার থেকে পাওয়া একটি জমিদার বাড়ি। ১৭০০ শতকের দিকে নির্মিত রাজা রামমোহন রায়ের খালিয়া জমিদারী পাওয়া নিয়ে একটি লোক-কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। কথিত আছে, রাজা রামমোহন রায়ের মা-বাবা উজানির জমিদার বাড়িতে দাসদাসী হিসেবে কাজ করতো। কাজে যাওয়ার সময় তারা ছোট্ট রাজা রামমোহন রায়কে বাড়ির আঙ্গিনায় রেখে যেত এবং বাড়ির আঙিনায় থাকা ফনিমনসা গাছ রামমোহনকে রোদ-বৃষ্টি থেকে রক্ষা করতো। এই বিষয়টি উজানির জমিদার দেখে ফেলেন এবং রামমোহন রায়ের শরীরে একটি রাজতিলক লক্ষ্য করেন। আর এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উজানির জমিদার তার সাতটি জমিদারী থেকে একটি রাজারাম মোহন রায়কে দান করেন এবং তার পিতামাতাকে দাসদাসী থেকে মুক্ত করেন। এখান থেকেই জমিদার হিসেবে রাজা রামমোহন রায়ের গোড়াপত্তন হয়।
প্রায় ২৫০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত রাজা রামমোহন রায়ের বাড়ির প্রাঙ্গনে একটি তিন তালা দালান, বাগানবাড়ি, পূজা মণ্ডপ এবং শান বাঁধানো পুকুর ঘাট রয়েছে। বর্তমানে রাজা রামমোহন রায়ের বাড়ির মন্দির প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
কিভাবে যাবেন
ঢাকার গাবতলী ও কেরানিগঞ্জ থেকে মাদারীপুরগামী বিভিন্ন সরাসরি বাস সার্ভিস রয়েছে। গাবতলী থেকে সার্বিক, চন্দ্রা ও সোহেল পরিবহনের বাসে মাদারীপুর যেতে পারবেন। এছাড়া গাবতলী থেকে বরিশালগামী বাসে মোস্তফাপুর নেমে সেখান থেকেও মাদারীপুর সদরে যাওয়া যায়। আর ঢাকার সদরঘাট থেকে এমভি তরীকা বা দ্বীপরাজের লঞ্চ সার্ভিস মাদারীপুরের উদ্দেশ্যে যাতায়াত করে। মাদারীপুর জেলা থেকে বাসে বা সিএনজিতে রাজৈর উপজেলা পৌঁছে স্থানীয় পরিবহণে রাজা রামমোহন রায়ের বাড়ি বা খালিয়া জমিদার বাড়িতে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
মাদারীপুর শহরে থাকার জন্য হোটেল মাতৃভূমি, সুমন হোটেল, হোটেল পলাশ, সৈকত হোটেল, হোটেল সার্বিক ইন্টারন্যাশনাল ও হোটেল জাহিদ প্রভৃতি আবাসিক হোটেল রয়েছে।
কোথায় খাবেন
রাজৈর উপজেলায় সাধারণ মানের বেশকিছু খাবারের হোটেল রয়েছে। আরও ভালমানের খাবারের জন্য মাদারীপুর জেলার রেস্টুরেন্টগুলোতে যেতে পারেন।
মাদারীপুর জেলার দর্শনীয় স্থান
মাদারীপুরের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে সেনাপতির দীঘি, মিঠাপুর জমিদার বাড়ি, গনেশ পাগল সেবাশ্রম, শকুনি লেক ও আউলিয়াপুর নীলকুঠি উল্লেখযোগ্য।
ফিচার ইমেজ: ফয়সাল বাপ্পি