লক্ষ্মীপুর জেলা থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে রায়পুর উপজেলায় বাংলাদেশের বৃহত্তম ও এশিয়া মহাদেশের মধ্যে অন্যতম রায়পুর মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (Raipur Fish Hatchery and Training Centre) অবস্থিত। ১৯৭৯ সালে দেশের প্রধান খালগুলোতে মাছের পোনা ও রেনু চাষ এবং সরবারহের লক্ষ্যে রায়পুরে এই মৎস্য প্রজনন কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৮২ সালে রায়পুর মৎস্য প্রজনন কেন্দ্রে কৃত্রিম মৎস্য প্রজনন শুরু করা হয় এবং ১৯৯২ সাল থেকে কেন্দ্রটি বানিজ্যকভাবে মাছ উৎপাদন শুরু করে। ১৯৭৯-১৯৯২ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্রটি ড্যানিশ উন্নয়ন সংস্থা ড্যানিডা কর্তৃক নোয়াখালী আঞ্চলিক উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে জেলার বৃহত্তম মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। বর্তমানে মৎস্য বিভাগের সরাসরি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত দেশের তিনটি মৎস্য প্রজনন কেন্দ্রের মধ্যে রায়পুর মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র অন্যতম।
প্রায় ৫৪ একর জুড়ে রায়পুর মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি গড়ে উঠেছে। এখানে ৮টি খামার, ১৪টি ডেইরি খামার, ৭২টি পোলট্রি খামার ও ২০১টি পুকুর রয়েছে। এছাড়া আছে ৪ কক্ষ বিশিষ্ট সরকারি হাউজ, একটি হ্যাচারি ও ল্যাবরেটরি। এই মৎস্য প্রজনন কেন্দ্রের প্রায় ১২ টন প্রজননক্ষম মা মাছ থেকে কাতলা, মৃগেল, কালাবাউশ, মাগুর ও শিং মাছসহ বিভিন্ন জাতের প্রায় ৫০৪ কেজি পোনা উৎপাদিত হয়।
কিভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে গ্রীনল্যান্ড এক্সপ্রেস, রয়েল কোচ, হিমাচল এক্সপ্রেস, ইকোনো, মিয়ামি, আল বারাকা, জোনাকি সার্ভিস ও ঢাকা এক্সপ্রেস বাসে লক্ষ্মীপুর যাওয়া যায়। এছাড়া ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে লঞ্চে লক্ষ্মীপুর মজু চৌধুরীর ঘাট যেতে পারবেন। লক্ষ্মীপুর পৌঁছে রিকশা বা সিএনজিতে রায়পুর মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যেতে পারবেন। তবে মৎস্য কেন্দ্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।
কোথায় থাকবেন
লক্ষ্মীপুরে হোটেল ফিরোজ, এন আর গেস্ট হাউজ, স্টার গেস্ট হাউজ, সেন্ট মার্টিন আবাসিক, সোনার বাংলা গেস্ট হাউজ, হোটেল আব-ই-হায়াত ও হোটেল ইউনিক প্রভৃতি আবাসিক হোটেল রয়েছে।
কোথায় খাবেন
লক্ষ্মীপুর শহরের মেইন রোডের কাছে বিভিন্ন মানের রেস্তোরাঁ, ফাস্ট ফুড শপ ও চাইনিজ রেস্টুরেন্ট রয়েছে। ভালমানের খাবারের জন্য তৃপ্তি হোটেল, হোটেল রাজমহল, নিউ লক্ষ্মী, গ্র্যান্ড হোটেল, কুটুম বাড়ি, আব্বাস আলী রেস্টুরেন্ট, মোহাম্মদীয়া হোটেল ও ফুড গার্ডেন উল্লেখযোগ্য। আর সুযোগ পেলে লক্ষ্মীপুরের রামগতির মহিষের দই ও ছানার জিলাপির স্বাদ নিয়ে দেখতে পারেন।
লক্ষ্মীপুর জেলার দর্শনীয় স্থান
লক্ষ্মীপুরের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে মতিরহাট সৈকত, জ্বীনের মসজিদ, চর আলেকজান্ডার ও দালাল বাজার জমিদার বাড়ি অন্যতম।
ফিচার ইমেজ: সাইফুল্লাহ খান
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।