পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি (Pakutia Zamindar Bari) টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। জমিদার বাড়ির তিনটি মহলের রয়েছে নিজস্ব বিশিষ্ট ও অপূর্ব লতাপাতার কারুকাজ। বর্তমানে এই জমিদার বাড়িতে বি.সি.আর.জি.ডিগ্রী কলেজ চালু আছে। পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি কাছেই আছে নাটমন্দির, কালীমন্দির এবং একটি বিশাল পুকুর।

ইংরেজ আমলের শেষ দিকে পশ্চিম বঙ্গের কলকাতা থেকে রামকৃষ্ণ সাহা মন্ডল নামের এক ধনাঢ্য ব্যক্তি পাকুটিয়ায় এসে জমিদারী শুরু করেন। ১৯১৫ সালে প্রায় ১৫ একর জায়গাজুড়ে এক রকম নকশায় তিনটি প্যালেস/অট্টালিকা নির্মাণ করেন। তৎকালীন সময় এই পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি তিন তরফ বা তিন মহলা নামে সুপরিচিত ছিল।

কিভাবে যাওয়া যায়

ঢাকা থেকে গেলে সবচেয়ে ভালো হবে গাবতলী থেকে পাকুটিয়া গামী এস বি লিংক পরিবহণে গেলে। সাটুরিয়া পার হয়ে পাকুটিয়া বাজারে নেমে সেখান থেকে হাঁটা দূরত্বে পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি। এছাড়া ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে বিনিময়, ঝটিকা, ধলেশ্বরী ইত্যাদি বাস টাঙ্গাইলের উদ্দেশ্যে নিয়মিত যাত্রা করে। এই সমস্ত বাসে ভাড়া লাগে ১২০ থেকে ১৬০ টাকা।

ট্রেনে করে যেতে চাইলে একটু খোঁজ খবর নিয়ে দেখতে পারেন ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী কোন কোন ট্রেন টাঙ্গাইল রেলওয়ে স্টেশনে থামে। তাহলে ট্রেনে করে সহজে টাঙ্গাইল যেতে পারবেন। টাঙ্গাইল থেকে সিএনজি অথবা দেলদুয়ার হয়ে লাউহাটি হয়ে পাকুটিয়া গামী লোকাল পরিবহণে যেতে পারবেন জমিদার বাড়ি।

ঢাকা থেকে আরিচা রোডে কালামপুর স্ট্যান্ড হয়ে সাটুরিয়া দিয়ে সোজা উত্তর দিকে ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে পাকুটিয়া জমিদার বাড়ী। আবার টাংগাইল জেলা হতে দক্ষিণ দিকে অবস্থিত দেলদুয়ার হয়ে লাউহাটি দিয়েও পাকুটিয়া জমিদার বাড়ী যাওয়া যায়।

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি ও পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলায় আর পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায় অবস্থিত হলেও কাছাকাছি হওয়ায় একদিনে একই সাথে এই দুই জাগাতেই ভ্রমণ করা যায়। সেই ক্ষেত্রে আপনার সুবিধা মত কি আগে দেখবেন তার উপর নির্ভর করে সেভাবে যেতে পারবেন। ঢাকার গাবতলী থেকে ছেড়ে যাওয়া এস বি লিংক বাস বালিয়াটি হয়ে পাকুটিয়া যায়। আপনি বালিয়াটি জমিদার বাড়ির সামনে নেমে তা দেখে পরে আবার সিএনজি বা স্থানীয় কোন পরিবহণে পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি যেতে পারবেন। সিএনজি ভাড়া নিবে ২৫-৩০ টাকা। আবার চাইলে পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি আগে থেকে সাটুরিয়াতে এসে বালিয়াটি জমিদার বাড়ি ঘুরে দেখতে পারবেন।

একদিনে ভ্রমণ পরিকল্পনা

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় বেশকিছু বিখ্যাত জমিদার বাড়ী রয়েছে, যেগুলো একই দিনে ভ্রমণ করা যায়। লোকাল বাসে গেলে সময় বেশি লাগবে আর তখন একদিনে তিনটা জায়গা দেখা যাবে না। কিন্তু প্রাইভেট কার কিংবা মাইক্রো রিজার্ভ করে নিলে সুন্দর ভাবে একই দিনে তিনটি জমিদার বাড়ি দেখে ফেরা যাবে। সেক্ষেত্রে নিচের সিডিউলের সাথে মিলিয়ে নিলে আপনার ভ্রমণ আরো সহজ হতে পারে।

সকাল ৭ টার মধ্যে ঢাকা থেকে নিজস্ব পরিবহনে যাত্রা শুরু করতে হবে। সকাল ৮ টার দিকে পথে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত বটতলায় সকালের নাস্তা সেরে নিতে পারেন। নাস্তা শেষ করে ৮ টা ৩০ মিনিটের মধ্যে বালিয়াটি জমিদার বাড়ীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে পারেন। সবকিছু ঠিক থাকলে সকাল ১০ টার মধ্যে বালিয়াটি জমিদার বাড়ী পৌঁছে যাবেন। বালিয়াটি জমিদার বাড়ী্র কাছে হোটেলে দুপুরের খাবার খেয়ে দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিটের মধ্যে পাকুটিয়া জমিদার বাড়ীর জন্য যাত্রা করতে পারেন। ১ ঘন্টা পাকুটিয়া জমিদার বাড়ীতে অবস্থান শেষে দুপুর ২ টার দিকে নাগরপুর জমিদার বাড়ী চলে যান। বিকাল ৩ টা ৩০ মিনিট থেকে বিকাল ৫ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত নাগরপুর জমিদার বাড়ীর আশেপাশের কিছু স্থাপনা দেখে ও আড্ডা শেষে ৫ টা ৩০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে ফিরতি ভ্রমন শুরু করতে পারেন।

ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে

ম্যাপে পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

শেয়ার করুন সবার সাথে

ভ্রমণ গাইড টিম সব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানান অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ পাতায় যোগাযোগ করুন।
দৃষ্টি আকর্ষণ : যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই ভ্রমণ গাইডে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ও নানা রকম যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যে ভ্রমণ গাইড দায়ী থাকবে না।