টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলার পালপাড়ায় পাকুল্লা বাজারের কাছে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট পাকুল্লা মসজিদ (Pakulla Jame Masjid) অবস্থিত। আনুমানিক ১৭শ শতকের শুরুর দিকে নির্মিত আয়তাকৃতির পাকুল্লা মসজিদের দৈর্ঘ্য ১৪.৭৭ মিটার, প্রস্থ ৫.৮৫ মিটার এবং মসজিদের দেয়ালগুলো ১.২৫ মিটার পুরু। পাকুল্লা মসজিদের সাথে দিল্লির আওরঙ্গজেবের মতি মসজিদ, বর্ধমানে খাজা আনোয়ার শহীদের সমাধি এবং ঢাকার কাজী খাজা শাহবাজের মসজিদের সাদৃশ্য রয়েছে।

পাকুল্লা মসজিদের অভ্যন্তরীনভাগ খাঁজকাটা খিলান দিয়ে তিনটি ভাগে বিভক্ত। মসজিদের চারকোণায় বিদ্যামান ৪টি সুউচ্চ অষ্টভুজাকৃতির বুরুজ, ৩টি কারুকার্যমণ্ডিত প্রবেশ পথ ও পশ্চিম দেয়ালের ভিতরে চারকোণা বিশিষ্ঠ তিনটি নকশাকৃত অবতল মিহরাবের সমন্বয়ে মসজিদের মূল কাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। এদের মধ্যে অভ্যন্তরের কেন্দ্রীয় মিহরাবটি খাঁজকাটা বিশিষ্ট ও পার্শ্ববর্তী দুইটি মিহরাব খাঁজবিহীন। অষ্টভুজাকৃতি পিলারের উপর স্থাপিত তিনটি গম্বুজ মসজিদের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। তিনটি গম্বুজের মধ্যে কেন্দ্রীয় গম্বুজটি পাশের দুইটি গম্বুজ অপেক্ষা আকারে বড়। এছাড়া মসজিদের উভয় দিকে চৌচালা ধাঁচের ইট ও পলেস্তরায় দুইটি কক্ষ নির্মাণ করা হয়েছে। মূলত, মসজিদে শিক্ষারত ছাত্রদের অধ্যায়ন ও ইমামের থাকার জন্য বর্তমানে এই কক্ষ দুটি ব্যবহার করা হয়।

কিভাবে যাবেন

পাকুল্লা মসজিদে যেতে হলে প্রথমে টাঙ্গাইল আসতে হবে। ঢাকার মহাখালি বা কল্যাণপুর থেকে টাঙ্গাইল কিংবা ধনবাড়ীগামী বাসে টাঙ্গাইল যেতে পারবেন। টাঙ্গাইল থেকে বাসে চড়ে ৪৩ কিলোমিটার দূরের দেলদুয়ার উপজেলায় পৌঁছে রিকশা বা ভ্যানে পাকুল্লা বাজার হয়ে পাকুল্লা জামে মসজিদে যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন

ঢাকা থেকে একদিনে টাঙ্গাইলের পাকুল্লা মসজিদ ঘুরে ফিরে আসতে পারবেন। প্রয়োজনে রাতে থাকতে চাইলে টাঙ্গাইল শহরে অবস্থিত হোটেল আল ফয়সাল, ব্যুরো হোটেল, আনসারি প্যালেস, হোটেল প্রিন্স, হোটেল শান্তি, যমুনা রিসোর্ট, এলেঙ্গা রিসোর্টের মতো হোটেল ও রিসোর্টে যোগাযোগ করতে পারবেন।

কোথায় খাবেন

দেলদুয়ার উপজেলায় সাধারণ মানের খাবারের রেস্তোরাঁ রয়েছে। এছাড়াও টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ে বিভিন্ন মানের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট আছে। টাঙ্গাইল শহরের জনপ্রিয় খাবারের মধ্যে পাঁচআনি বাজারের পোড়াবাড়ি চমচম অন্যতম।

টাঙ্গাইলের দর্শনীয় স্থান

টাঙ্গাইল শহরের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে এসপি পার্ক, ২০১ গম্বুজ মসজিদ, গুপ্ত বৃন্দাবন ও মধুপুর জাতীয় উদ্যান উল্লেখযোগ্য।

ফিচার ইমেজ: আয়মান হোসাইন

ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে

ম্যাপে পাকুল্লা মসজিদ

শেয়ার করুন সবার সাথে

ভ্রমণ গাইড টিম সব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানান অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ পাতায় যোগাযোগ করুন।
দৃষ্টি আকর্ষণ : যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই ভ্রমণ গাইডে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ও নানা রকম যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যে ভ্রমণ গাইড দায়ী থাকবে না।