রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার একটি গ্রামের নাম পায়রাবন্দ (Pairaband)। এই পায়রাবন্দ গ্রামে ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া (রোকেয়া খাতুন) জন্মগ্রহণ করেন। বেগম রোকেয়ার পিতা জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের ছিলেন একজন সম্ভ্রান্ত ভূস্বামী। তাঁর মায়ের নাম রাহাতুন্নেসা সাবেরা চৌধুরানী। তৎকালীন সমাজব্যবস্থার সাথে মিল রেখে বেগম রোকেয়াকে নিজ গৃহে আরবী ও উর্দু শেখানো হত। বেগম রোকেয়া তাঁর বড় ভাই ইব্রাহীম সাবেরের কাছে গোপনে বাংলা ও ইংরেজি শিখতে শুরু করেন। ১৮৯৬ সালে বেগম রোকেয়ার ভাগলপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন মুক্তমনা ছিলেন এবং তিনি বেগম রোকেয়াকে লেখালেখি করতে উৎসাহ দিতেন। ১৯০২ সালে পিপাসা নামের একটি গল্পের মাধ্যমে সাহিত্যজগতে পদার্পণ করেন এই মহীয়সী নারী।
বেগম রোকেয়ার বাড়ির পাশে সরকারী ব্যবস্থাপনায় ৩.১৫ একর ভূমির উপর বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখানে আছে নান্দ্যনিক বাগান, অফিস ভবন, ৪ তলা ডরমেটরি ভবন, গবেষণা কক্ষ, লাইব্রেরি, আধুনিক গেস্ট হাউজ এবং পিতলের তৈরী বেগম রোকেয়ার ভাষ্কর্য। এছাড়া এখানে বিকেএমই নামের ট্রেনিং সেন্টারে তরুণদের কর্মসংস্থানে সহায়ক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তবে বেগম রোকেয়ার পৈত্রিক বাড়িতে বর্তমানে ইটের দেয়ালের গাথুনি ছাড়া কিছুই আর অবশিষ্ট নেই।
কিভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর, মহাখালী, গাবতলী এবং কল্যাণপুর থেকে নাবিল, হক এন্টারপ্রাইজ, এস আর ট্রাভেলস, আগমনী এক্সপ্রেস, এনা, হানিফ, গ্রিনলাইন, আলহামরা ট্র্যাভেলস, মীম, এস আর ট্র্যাভেলস, কুড়িগ্রাম পরিবহনের বাস রংপুরের পথে চলাচল করে। এসব এসি, নন-এসি বাসের ভাড়া ৭০০-১৩০০ টাকা।
এছারা ঢাকার কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে রংপুর এক্সপ্রেস ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনে রংপুর যেতে পারেন। এক্ষেত্রে জনপ্রতি টিকেটের ভাড়া শোভন চেয়ার ৪৭০-৫০৫ টাকা, স্নিগ্ধা ৯০৩-৯৬৬ টাকা, এসি সিট ১১৬২ টাকা ও এসি কেবিন ১৬৭২ টাকা।
রংপুর শহর থেকে রিকসা, ইজিবাইক কিংবা বাসে চড়ে ১৩ কিলোমিটার দূরে পায়রাবন্দ গ্রাম হতে সহজেই ঘুরে আসা যায়।
কোথায় থাকবেন
রংপুরে অবস্থিত আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল নর্থভিউ, পর্যটন মোটেল, দি পার্ক হোটেল, হোটেল গোল্ডেন টাওয়ার, হোটেল তিলোত্তমা, হোটেল কাশপিয়া প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
কোথায় খাবেন
রংপুর শহরে বিভিন্ন মানের খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট আছে। তবে আমের সিজনে রংপুর গেলে বিখ্যাত হাড়িভাঙ্গা আম অবশ্যই খেয়ে দেখবেন।
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।