চাঁদপুর জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র মুক্তিযোদ্ধা সড়কের পাশের লেকে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে অঙ্গীকার ভাস্কর্য (Ongikar Monument) নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে অবস্থিত অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্যের স্থপতি সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ এটি নির্মাণ করেন। চাঁদপুরের কেন্দ্রীয় স্মৃতিসৌধ হিসেবে খ্যাত ১৫ ফুট উচ্চতার অঙ্গীকার ভাস্কর্য তৈরিতে সিমেন্ট, পাথর এবং লোহা ব্যবহার করা হয়েছে।
হাসান আলী সরকারি হাই স্কুলের মাঠের সামনে অবস্থিত অঙ্গীকার ভাস্কর্যের উপরের দিকে তোলা বদ্ধমুষ্ঠি স্বাধীনতার পক্ষে জনতার দৃঢ়তার প্রতীক, আর হাতে থাকা অস্ত্রের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন ও রক্ষার শক্তিকে প্রকাশ করা হয়েছে। ১৯৮৯ সালে চাঁদপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসক এসএম শামছুল আলমের প্রচেষ্টায় দৃষ্টিনন্দন অঙ্গীকার ভাস্কর্যটি নির্মিত হয়। প্রতিবছর বিভিন্ন জাতীয় দিবসগুলোতে অঙ্গীকার ভাস্কর্যের পাদদেশে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়ে থাকে। আর প্রতিদিন বিকেল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভাস্কর্যের চারপাশ অসংখ্য দর্শনার্থীর পদভারে মুখর হয়ে উঠে। চাঁদের আলোতে লেকের জলে অঙ্গীকার ভাস্কর্যের ছাড়া দেখতে অসাধারণ লাগে।
কিভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল হতে প্রতিদিন সকাল ৭ টা থেকে ১ ঘন্টা পর পর বেশকিছু লঞ্চ চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। ঢাকা হতে চাঁদপুরগামী লঞ্চের মধ্যে এমভি সোনারতরী, এমভি তাকওয়া, এমভি বোগদাদীয়া, এমভি মেঘনা রাণী, এমভি আল বোরাক, এমভি ঈগল, এমভি রফরফ, এমভি তুতুল প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। ঢাকা থেকে চাঁদপুর যাওয়ার লঞ্চের ভাড়া শ্রেনী ভেদে ১০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। জলপথে ঢাকা থেকে চাঁদপুর পৌঁছাতে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘন্টা সময় লাগে।
এছাড়া ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন সকাল ৬ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত পদ্মা এক্সক্লিসিভ বাস চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। আবার চাইলে ঢাকা হতে ট্রেনে চড়ে চাঁদপুরে যেতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে ঢাকা থেকে প্রথমে লাকসাম এসে সেখান থেকে চাঁদপুর যেতে হবে।
চাঁদপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে অঙ্গীকার ভাস্কর্যের দূরত্ব মাত্র ১.৫ কিলোমিটার। শহরের যেকোন স্থান থেকে রিক্সা বা অটোরিক্সায় চড়ে ভাস্কর্যে পৌঁছাতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
চাঁদপুর শহরে থাকার জন্যে ভাল মানের হোটেলের মধ্যে হোটেল গ্র্যান্ড হিলশা অন্যতম। এছাড়া চাঁদপুরে কোর্ট ষ্টেশনের কাছে মোটামুটি মানের আরও কিছু আবাসিক হোটেল পাবেন। চৌধুরী ঘাট বা নতুন ব্রিজের কাছে নদীর পাড়ে কিছু মধ্যম মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে।
কোথায় খাবেন
খিদে মেটানোর জন্য চাঁদপুরে বিভিন্ন মানের বেশকিছু খাবার হোটেল রয়েছে। আপনার পছন্দমত যেকোন হোটেলে খাবার খেয়ে নিতে পারবেন। তাজা ইলিশ খেতে চাইলে বড়স্টেশনের ঝুপড়ির হোটেল অথবা লঞ্চ ঘাটের হোটেল গুলোতে খোঁজ নিতে পারেন। সেই সাথে ফরিদগঞ্জের আউয়াল ভাইয়ের মিষ্টি এবং ওয়ান মিনিট আইসক্রিমের চেখে দেখতে পারেন।
ফিচার ইমেজ: Abandoned Shafkat
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।