নোয়াখালী জেলার প্রাণকেন্দ্রে শহরের অন্যতম প্রধান মসজিদ নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদ (Noakhali Zilla Jame Mosque) অবস্থিত। অনন্য সুন্দর এই স্থাপনাটি স্থানীয়দের কাছে মাইজদী বড় মসজিদ নামে পরিচিত। ১৮৪১ সালে পুরাতন নোয়াখালী শহরে ইমাম উদ্দিন নামের এক সওদাগর নিজ জমিতে নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদ স্থাপন করেন। মূল নোয়াখালী শহরের সাথে এই জামে মসজিদটিও মেঘনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তীতে নোয়াখালী জেলার মূল শহর মাইজদীতে স্থানান্তর করার সময় ১৯৫০ সালে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যাক্তিগত আর্থিক সহায়তায় নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদ পুনঃনির্মাণ করা হয়।
প্রায় ৩.৮ একর জায়গার উপর নির্মিত জেলা জামে মসজিদের নির্মাণশৈলীতে মুসলিম ও দেশী লোকজ শিল্পের প্রভাব লক্ষ করা যায়। মসজিদের দৈর্ঘ্য ১৩০ ফুট এবং প্রস্থ ৮০ ফুট। মসজিদের অভ্যন্তরে থাকা পুরনো মসজিদের সুদৃশ্য ঝাড়বাতি, লোহার সুদৃশ্য গেইট ও অসংখ্য শ্বেত পাথরের টুকরো মসজিদের শোভা বর্ধন করছে অসাধারণ শৈল্পিকতায়। মসজিদের মূল ভবনে আছে ইসলামী স্থাপত্যে নির্মিত ৩টি সুদৃশ্য গম্বুজ ও ৯টি মিনার। এছাড়া ছোট এক তলা ভবনে নকশাকারে ফুল-লতাপাতাসহ কোরআনের বিভিন্ন আয়াত ও উপদেশমূলক বাণী খচিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদে আগত মুসল্লিদের জন্য আধুনিক শৌচাগার, গোসলখানা ও অজুখানা নির্মাণ করা হয়েছে। আর মসজিদের পশ্চিম দিকে আছে একটি বড় পুকুর, দক্ষিণ দিকে জিলা স্কুল , উত্তরে ষ্টেশন রোড, জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ও জেলা সড়ক বিভাগের ভবন এবং পূর্ব দিকে আছে গণপূর্ত বিভাগের কার্যালয়। বর্তমানে নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদের সাথে “মানব কল্যাণ মজলিস” নামের একটি জনহিতকর সংস্থা আর্তমানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছে।
কিভাবে যাবেন
ঢাকার মিরপুর, সায়েদাবাদ ও জিগাতলা থেকে হিমাচল, বিলাস, একুশে, ভিআইপি বা শাহী এক্সপ্রেসে নোয়াখালী যাওয়া যায়। নোয়াখালী জেলা সদর অর্থাৎ মাইজদী পৌঁছে সেখান থেকে রিকশা নিয়ে বা পায়ে হেঁটে জেলা জামে মসজিদ যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
নোয়াখালীর মাইজদী শহর ও চৌমুহনীতে পূবালী হোটেল, হোটেল আল মোর্শেদ, হোটেল মৌচাক, হোটেল লিটন, আজমির হোটেল, হোটেল নিজাম, হোটেল রাফসান, হোটেল আর ফারহান, হোটেল রয়্যাল, হোটেল সুগন্ধ্যা ইন্টার ন্যাশনালের মতো বেশকিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে।
কোথায় খাবেন
নোয়াখালী শহরে অবস্থিত জনতা হোটেল, হাজি বিরিয়ানি, রাহমানিয়া হোটেল, স্কাই ভিউ হোটেল, দারুচিনি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এবং ফাইভ স্টার হোটেলে মানভেদে বাঙ্গালী, চাইনিজ ও ফাস্টফুড খাবার পাওয়া যায়।
নোয়াখালী জেলার দর্শনীয় স্থান
নোয়াখালী জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে মুছাপুর ক্লোজার, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর, গান্ধী আশ্রম, নোয়াখালী ড্রিম ওয়ার্ল্ড পার্ক, বজরা শাহী মসজিদ ও নিঝুম দ্বীপ অন্যতম।
ফিচার ইমেজ: মোঃ রাসেল
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।