১৯৩০ সালে রাস বিহারী পর্বত মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নে কুমার নদীর তীরে দেশি-বিদেশি প্রায় ৫০০ প্রজাতির গাছের চারা রোপন করে একটি বাগান গড়ে তোলেন। প্রায় ২৬ একর জমির ওপর তৈরী বাগানকে তাঁর নামানুসারে পর্বত বাগান (Parbat Bagan) নামকরণ করা হয়। পর্বত বাগানের পাশ দিয়ে বয়ে চলা কুমার নদী চারপাশের পরিবেশকে করেছে আরো মোহনীয়। ফলে তৎকালীন সময়ে মাদারীপুর মহকুমার সকল উচ্চপদস্থ কর্মকতার অবাধ আগমন ঘটতো পর্বত বাগানে।

মাদারীপুর জেলার অন্যতম জনপ্রিয় পিকনিক স্পট হিসাবে পরিচিত পর্বত বাগানের দেশী-বিদেশী হাজারো গাছের মধ্যে নারিকেল, সুপারি, আম, জাম, কাঁঠাল, কামরাঙ্গা, আমড়া, কুল, সফেদা, জলপাই, আমলকী, কমলা, জামরুল প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া বাগানের শোভা বর্ধনের জন্য আরো আছে গোলাপ, জবা, গন্ধরাজ, বকুল, টগর, বেলী, জুই, কামিনী, হাসনাহেনা ইত্যাদি জানা অজানা ফুলের গাছ। পাখির কল-কাকলিতে মুখরিত পর্বত বাগানে আছে ৬টি শান বাধানো পুকুর, ১৪ কক্ষ বিশিষ্ট রাস বিহারি পবর্তের দ্বিতল বাসভবন, মন্দির, রাস বিহারি পর্বতের বাবা রাজকুমার পবর্ত ও মা বিধুমুখি পবর্তের সমাধিসৌধ এবং বাগানের কাছে আছে অবস্থিত সুরেশ চন্দ্র পোদ্দারের জমিদার বাড়ি উল্লেখযোগ্য।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে সড়কপথে মাদারীপুরের দূরত্ব ১৯১ কিলোমিটার। ঢাকার গাবতলি ও কেরানীগঞ্জ (নয়া বাজারের ব্রীজের ওপারে) থেকে মাদারীপুরগামী সরাসরি (ডাইরেক্ট) বাস চলাচল করে। গাবতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে সার্বিক পরিবহন, চন্দ্রা পরিবহন এবং সোহেল পরিবহনের বাস মাদারীপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকেও নিয়মিত বিরতিতে মাদারীপুরগামী বাস বিভিন্ন বাস যাতায়াত করে। ডিরেক্ট বাসের টিকেট কাটতে চেষ্টা করুন, টিকেট মূল্য জনপ্রতি ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা (পরিবর্তনশীল)। বাসে চড়ে মাদারীপুর পৌঁছাতে প্রায় ৫ ঘন্টা সময় লাগে।

মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নে কুমার নদীর দক্ষিণ তীর ঘেঁষে পর্বত বাগানের অবস্থান। মস্তফাপুর (মস্তাপুর) বড় ব্রীজের আগে বাম দিকের রাস্তা ধরে পর্বত বাগানে পৌঁছানো যায়।

কোথায় থাকবেন

মাদারীপুরে থাকার জন্য বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে। হোটেল সার্বিক (01788-812111), হোটেল মাতৃভূমি (01708-529781), হোটেল সৈকত (+880-1716-501888) এবং সুমন হোটেল (01937-039050) উল্লেখযোগ্য। এছাড়া জেলা পরিষদের ডাক বাংলোতেও থাকার সুযোগ রয়েছে।

কোথায় খাবেন

দিনের স্বাভাবিক খাবারেরে চাহিদা মেটানোর জন্য মাদারীপুরে বিভিন্ন মানের খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এছাড়া শকুনি লেকের কাছের দোকান থেকে চটপটি, ফুচকা এবং সুস্বাদু মিষ্টি খেতে ভুল করবেন না।

ফিচার ইমেজ: ইন্টারনেট

ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে

ম্যাপে পর্বত বাগান

শেয়ার করুন সবার সাথে

ভ্রমণ গাইড টিম সব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানান অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ পাতায় যোগাযোগ করুন।
দৃষ্টি আকর্ষণ : যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই ভ্রমণ গাইডে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ও নানা রকম যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যে ভ্রমণ গাইড দায়ী থাকবে না।