মংলা বন্দর বা মংলা পোর্ট (Mongla Port) খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার সেলাবুনিয়া মৌজায় পশুর ও মোংলা নদীর সংযোগস্থলে অবস্থিত। ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত মংলা বন্দর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর। খুলনা থেকে মংলা বন্দরের দূরত্ব ৪৮ কিলোমিটার। বন্দরটি বঙ্গোপসাগর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। মংলা পোর্টটি অন্যান্য অভ্যন্তরীণ নদী বন্দর ও খুলনায রেল টার্মিনালের সাথে সংযুক্ত রয়েছে।
মংলা বন্দরটি পণ্য খালাসের জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে, এখানে সর্বোচ্চ ২২৫ মিটার লম্বা জাহাজ প্রবেশ করতে পারে। প্রতিবছর মংলা বন্দরে প্রায় ৪০০ টি জাহাজ নোঙরের মাধ্যমে প্রায় ৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন পন্য আমদানি-রপ্তানি করে। এই বন্দরে পণ্য বোঝাই ও খালাসের জন্য এগারোটি জেটি, সাতটি শেড এবং আটটি ওয়্যারহাউজ রয়েছে। এছাড়াও নদীর গভীরে ভাসমান বারোটি নোঙর স্থান আছে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ সুন্দরবনের হিরণ পয়েন্টে নাবিকদের থাকার কথা ভেবে একটি রেস্ট হাউজ নির্মাণ করেছে।
শুরুতে মংলা বন্দরটি চালনা থেকে পশুর নদীর ১৮ কিলোমিটার উজানে গড়ে উঠে, এরপর ১৯৫০ সালের ১১ ডিসেম্বর বিদেশি জাহাজের জন্য বন্দর উন্মুক্ত হলে জাহাজ নোঙরের অধিক সুবিধার কথা ভেবে ১৯৫৪ সালে বন্দরটি মংলায় বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত হয়। বিশ্বের প্রায় সকল বন্দরের সাথে এই মংলা বন্দরের সংযোগ থাকলেও এখানে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা থেকেই বেশিরভাগ জাহাজ আসে।
মংলা বন্দর যাওয়ার উপায়
ঢাকা থেকে বাগেরহাট হয়ে মংলা: ঢাকার গাবতলী কিংবা সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে মেঘনা পরিবহন, পর্যটক পরিবহন, সাকুরা পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, হানিফ, বনফূল, ঈগল, ফাল্গুনী, বলেশ্বর, দোলা, হামিম ইত্যাদি বাসে সহজেই বাগেরহাট আসতে পারবেন। বাস ভেদে জনপ্রতি ভাড়া লাগবে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। বাগেরহাট এসে রূপসা গামী বাসে চড়ে প্রথমে কাটাখালি বাস স্ট্যান্ডে এসে সেখান থেকে মংলাগামী বাসে ৬০ থেকে ৮০ টাকায় মংলা বন্দরে পৌঁছাতে পারবেন।
ঢাকা থেকে সরাসরি মংলা: সবচেয়ে ভাল হয় সায়দাবাদ বাস স্ট্যান্ড থেকে সরাসরি মংলা যাওয়ার বাসে চড়া। এক্ষেত্রে সুন্দরবন ও পর্যটক সার্ভিসের বাসে জনপ্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ভাড়ায় সরাসরি মংলা যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
পশুর নদীর অন্য পাড়েই মংলা শহর, তবে দুই পাড়েই রাত্রিযাপনের আবাসিক হোটেল রয়েছে। পশুর মংলা বাস স্ট্যান্ডের পাশেই বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের হোটেল রয়েছে।
এছাড়া বাগেরহাটেও রাতে থাকতে পারবেন। বাগেরহাট সদরে সরকারি গেস্টহাউস ও বিভিন্ন হোটেল আছে। মমতাজ, হোটেল অভি ছাড়াও কেন্দ্রীয় বাস স্টেশন সংলগ্ন হোটেল আল আমিন এবং হোটেল মোহনাতে ৪০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকায় রাত্রি যাপন করতে পারবেন।
খাবার সুবিধা
মংলায় বেশ কিছু সাধারণ মানের হোটেলে খেতে পারবেন, এছাড়া বাগেরহাট শহরে বাস স্ট্যান্ড কিংবা দরগার কাছে অবস্থিত হোটেলগুলোতে যেতে পারেন। তবে অবশ্যই খাবারের মান ও দাম সম্পর্কে জেনে নিন।
মংলার আশেপাশে দর্শনীয় স্থান
- বাগেরহাট জাদুঘর
- খান জাহান আলীর মাজার
- সুন্দরবন
- হিরণ পয়েন্ট
- দুবলার চর
- করমজল পর্যটন কেন্দ্র
- নয় গম্বুজ মসজিদ
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।