শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত ৬০০ বছরের পুরনো মহিষারের দিগম্বরী দীঘি (Mohisar Digumbori Dighi) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। মোঘল আমলের স্বাধীন ১২ ভূঁইয়ার এক ভূঁইয়া বিক্রমপুর পরগনার জমিদার রাজা চাঁদ রায় দিগম্বরীর সন্ন্যাসীদের অনুরোধে ১০ একর জায়গার উপর এই দীঘি খনন করেন। মহিষারের দিগম্বরী দীঘির চারপাশে ইতিহাসের অমর সাক্ষী দিগম্বরী সন্ন্যাসী বাড়ি, মেলা চত্বর, জোড়া পুকুর, মনসা মন্দির, কালি মন্দির চত্বর ও লক্ষ্মী মন্দিরসহ অসংখ্য স্থাপনা ঘিরে রয়েছে। ১৯৮২ সালে দীঘিটি পুনঃখননের সময় ৪২ কেজি ওজনের কষ্টি মূর্তিসহ বেশকিছু দুর্লভ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন খুঁজে পাওয়া যায়।
মহিষারের দিগম্বরী দীঘি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বেশ কিছু কল্প-কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। তাদের বিশ্বাস, মহিসার দীঘির জলে স্নান করলে পাপ ও রোগ থেকে মুক্তি মিলে। আর তাই দূর দূরান্ত থেকে অসংখ্য ভক্তরা বিভিন্ন মানত নিয়ে এই দীঘিতে স্নান করতে আসেন। বহু বছর ধরে এই দীঘির পাড়ে সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এছাড়া পহেলা বৈশাখে আয়োজিত মহিষারের বৈশাখী মেলা ও পূজা দর্শনার্থীদের কাছে বিশেষ আকর্ষণ। তখন দেশ-বিদেশের হাজার হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থীরা এই মেলায় সমবেত হয়। শীতকালে দীঘির পাড়ে অসংখ্য অতিথি পাখির আগমন লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানে দিগম্বরী দীঘি ও আশেপাশের বিভিন্ন স্থাপনা নিয়ে একটি অন্যতম পর্যটন এলাকা গড়ে তোলা হয়েছে।
কিভাবে যাবেন
ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে গ্লোরি এক্সপ্রেসে মাওয়া ঘাট পার হয়ে শরীয়তপুর যেতে পারবেন। শরীয়তপুর জেলা শহর পৌঁছে স্থানীয় যানবাহনে মহিষারের দিগম্বরী দীঘি দেখতে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
শরীয়তপুর শহরে শিকদার আবাসিক হোটেল, নূর ইন্টার ন্যাশনাল, হোটেল শের আলী ও চন্দ্রদাস রেস্ট হাউজের মতো আবাসিক হোটেল রয়েছে।
কোথায় খাবেন
শরীয়তপুর শহরে রুচিতা কাবাব ঘর, সুগন্ধা রেস্টুরেন্ট, রাফি ফুড কর্নার ও গার্ডেন রেস্টুরেন্টের মতো বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট আছে।
শরীয়তপুর জেলার দর্শনীয় স্থান
শরীয়তপুর জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে বুড়ির হাট জামে মসজিদ, রুদ্রকর মঠ, সুরেশ্বর দরবার শরীফ, ধানুকা মনসা বাড়ি ও মর্ডান ফ্যান্টাসি কিংডম অন্যতম।
ফিচার ইমেজ: অলক ভৌমিক
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।