পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার ভাইবোনছড়ার কংচাইরি পাড়ায় মায়াবিনী লেক (Mayabini Lake) অবস্থিত। খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে মাত্র ৩০ মিনিট দূরত্বে হওয়ায় নিরাপত্তা নিয়ে বাড়তি দুশ্চিন্তা করার সুযোগ নেই। ৪০ একর উঁচু-নিচু পাহাড়ি জায়গায় ১৫ একর নিসর্গময় লেক নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে এই মায়াবিনী লেক পর্যটন কেন্দ্র। পাহাড়ের নৈস্বর্গিক সৌন্দর্য্য, বিশাল আকাশ আর লেকের স্বচ্ছ শান্ত জল সহজেই মনকে নির্মল আনন্দে মাতিয়ে তোলে। মায়াবিনী লেকের মাঝখানে ছোট্ট সুন্দর দ্বীপে পর্যটকদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে একটি বিশ্রামাগার। আর লেকে ঘুরে বেড়ানোর জন্য রয়েছে নৌকার ব্যবস্থা।

মায়াবিনী লেকের কাছাকাছি দূরতে রয়েছে পানছড়ি রাবার ড্যাম, দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ বৌদ্ধ ধর্মীয় উপসনালয় অরণ্য কুটির এবং বেশকিছু দর্শনীয় স্থান। মায়াবিনী লেকে পিকনিকের জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। মায়াবিনী লেকের তত্ত্বাবধায়ক অংহ্লাপ্রু মারমা, ফোন: +88 01553 – 669596

কীভাবে যাবেন

ঢাকা হতে মায়াবিনী লেকে যেতে হলে প্রথমে খাগড়াছড়ি আসতে হবে। শান্তি, হানিফ, এস আলম, শ্যামলী, ইকোনো এবং সৌদিয়া পরিবহনের এসি/নন-এসি বাসে চড়ে সরাসরি খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন। বাস ভেদে জনপ্রতি ভাড়া লাগবে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। খাগড়াছড়ির চেংগী স্কোয়ার থেকে বাস, পিকআপ, জীপ (চাঁদের গাড়ী), মোটর বাইক, সিএনজি কিংবা মাহিন্দ্র ভাড়া করে পানছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কে অবস্থিত ভাইবোনছড়া বাজারে আসতে পারবেন। ভাইবোনছড়া বাজার থেকে জনপ্রতি ১০ টাকা অটোরিক্সা ভাড়ায় মায়াবিনী লেকে যাওয়া যায়। খাগড়াছড়ি থেকে ভাইবোনছড়া বাজারের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। খাগড়াছড়ি থেকে ভাইবোনছড়া বাজারে আসতে সিএনজি ভাড়া জনপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা লাগে। (বিঃ দ্রঃ সময়ানুপাতে ভাড়া পরিমান কম-বেশি হতে পারে।)

কোথায় থাকবেন

খাগড়াছড়ি শহরে রাত্রি যাপনের জন্য বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। রুম দেখে দরদাম করে পছন্দমত হোটেলে থাকতে পারবেন। হোটেলে ভেদে এক রাত অবস্থানের জন্য ভাড়ার সীমা ৪০০ টাকা ৩৫০০ টাকা। খাগড়াছড়ি শহরে ভালো মানের আবাসিক হোটেলের মধ্যে রয়েছে –

  • পর্যটন মোটেল : শহরের চেঙ্গী নদী পাড়ে অবস্থিত এই মোটেলের দুই বেডের এসি রুম ভাড়া ২১০০ টাকা এবং নন এসি রুম ভাড়া ১৩০০ টাকা। যোগাযোগঃ ০৩৭১-৬২০৮৪৮৫
  • হোটেল গাইরিং : খাগড়াছড়ি শহরে অবস্থিত এসি, নন এসি, ভিআইপি এসি ও গ্রুপ রুমের সুবিধা সহ শ্রেণী অনুযায়ী ভাড়া ১০০০ থেকে ৩০০০ টাকা। যোগাযোগঃ ০৩৭১-৬১০৪১, ০১৮১৫-১৬৩১৭৩
  • অরণ্য বিলাস : শহরের নারিকেল বাগান অবস্থিত এই হোটেলে টুইন বেড এসি ২৫০০ টাকা, কাপল এসি ২০০০ টাকা, সিঙ্গেল বেড এসি ১৫০০ টাকা, টুইন নন এসি ২০০০ টাকা এবং কাপল নন এসি ১৫০০ টাকা ভাড়া । যোগাযোগঃ ০১৮৩৮-৪৯৭২৫৭
  • গিরি থেবার : খাগড়াছড়ি ক্যন্টনমেন্টের ভিতরে অবস্থিত। ভিআইপি এসি রুম ভাড়া ৩০৫০ টাকা। এসি ডাবল রুম ভাড়া ২০৫০ টাকা। সিংগেল রুম যার ভাড়া ১২০০ টাকা। যোগাযোগ : ০১৮৫৯-০২৫৬৯৪
  • হোটেল ইকো ছড়ি ইন : যোগাযোগঃ ০৩৭১-৬২৬২৫ , ৩৭৪৩২২৫

যদি খুবই কম খরচে থাকতে চান তাহলে শাপলা চত্বরের আশেপাশে কিছু বোর্ডিং ধরণের হোটেল আছে সে গুলোতে ৩০০-৪০০ টাকায় থাকতে পারবেন।

কোথায় খাবেন

খাগড়াছড়ি জেলা শহরের শাপলা চত্বর ও বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এছাড়া পানথাই পাড়ায় অবস্থিত ‘সিস্টেম রেস্তোরা’ (01556-773493, 01732-906322) কফি, হাসের কালাভূনা, বাশকুড়ুল এবং ঐতিহ্যবাহী পাহাড়ি খাবারের স্বাদ নিতে পারেন।
এছাড়া দিঘিনালা গেস্ট হাউজে রাত্রি যাপন করলে দিঘিনালা বাজারে প্রয়োজনীয় খাবার খেতে পারবেন।

আশেপাশে আর যা দেখতে পারেন
দেবতা পুকুর
রিসাং ঝর্না
অপু ঝর্না
আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র
চক্রমুনি/অপরাজিতা (হাজারি) বৌদ্ধ বিহার
দিঘিনালা ঝুলন্ত ব্রীজ ও দিঘিনালা বন বিহার
জেলা পরিষদ পার্ক

ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে

ম্যাপে মায়াবিনী লেক

শেয়ার করুন সবার সাথে

ভ্রমণ গাইড টিম সব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানান অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ পাতায় যোগাযোগ করুন।
দৃষ্টি আকর্ষণ : যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই ভ্রমণ গাইডে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ও নানা রকম যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যে ভ্রমণ গাইড দায়ী থাকবে না।