যশোর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়িতে জেলা পরিষদের ডাকবাংলো, মধুসূদন জাদুঘর, লাইব্রেরি এবং সাগরদাঁড়ি পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণ করে মধুপল্লী (Modhupolli) নামকরণ করা হয়। মাইকেল মধুসূদন দত্ত ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সাগরদাঁড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রপিতামহ রাম কিশোর দত্ত খুলনা জেলার গোপালপুর গ্র্রামের বাস করতেন। পরবর্তীতে মাইকেল মধুসূদন দত্তের পিতামহ রামনিধি দত্ত যশোরের সাগরদাঁড়ি গ্রামে স্থানান্তরিত হয়ে জমিদারি ক্রয় করে দেবালয় স্থাপন করেন।
মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ির (Michael Madhusudan Dutta Bari) সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদের তীরে একটি নৌ ঘাট এবং কাঠবাদামের গাছ রয়েছে। এই ঘাটটিকে কবির বিদায়ী ঘাট বলা হয়। কথিত আছে ১৮৬২ সালে কবি ধর্মান্তরিত হওয়ার পর যখন নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন তখন পরিবার কবিকে ফিরিয়ে দেন। তখন কবি এই ঘাটের কাঠবাদাম গাছের তলায় তাঁবু খাটিয়ে ১৪ দিন অবস্থান করে কলকতায় চলে যান।
অপূর্ব নির্মাণশৈলীর জন্য ১৯৬৮ সালে ২৬ অক্টোবর তৎকালীন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ মধুসুদন দত্তের দোতলা বাড়িটিকে পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা ও সংস্কার করেন। ১৯৯৬ সালে সীমানা দেয়াল, প্রবেশ গেট, একটি মঞ্চ, অভ্যর্থনার স্থাপনা তৈরী এবং পুনঃসংস্কার করার ফলে বাড়িটি বর্তমান রূপ লাভ করে।
মধুপল্লী সময়সূচী : মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি (Michael Madhusudan Dutta Memorial House) এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত এবং অক্টোবর থেকে মার্চ মাস প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। প্রতি সাপ্তাহের রবিবার এবং সকল সরকারী ছুটির দিনে মধুপল্লী সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে।
প্রবেশ টিকেট মূল্য : মধুপল্লীতে যেকোন দেশি পর্যটকদের প্রবেশ করতে ১০ টাকা দিয়ে প্রবেশ টিকেট সংগ্রহ করতে হয়। আর বিদেশি পর্যটকদের প্রবেশে ১০০ টাকা ব্যয় করতে হয়। মধুপল্লীতে বাসে জন্য ১০০ টাকা, মাইক্রেবাস ও জীপের জন্য ৫০ টাকা এবং মোটর বাইকের জন্য ১০ টাকা পার্কিং খরচ প্রদান করতে হয়।
কিভাবে যাবেন
মধুপল্লী যেতে হলে দেশের যেকোন প্রান্ত হতে যশোর জেলা শহরে এসে বাসে চড়ে কেশবপুর আসতে হবে। কেশবপুর থেকে রিকশা যোগে সাগরদাঁড়ি গ্রামের মধুপল্লী পৌঁছাতে পারবেন। যশোর জেলা শহর থেকে মধুপল্লীর দূরত্ব প্রায় ৪৫ কিলোমিটার।
কোথায় থাকবেন
যশোরের সাগরদাঁড়ি গ্রামে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের একটি মোটেল চালু আছে। শ্রেণিভেদে মোটেলের রুমের ভাড়া ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে। যশোরে রাত্রিযাপনের জন্য বেশকিছু সরকারি রেস্ট হাউস এবং আবাসিক হোটেল রয়েছে। এদের মধ্যে হোটেল সিটি প্লাজা ইন্টারন্যাশনাল (01795-477977), হোটেল হাসান ইন্টারন্যাশনাল (0421-67478), হোটেল শামস ইন্টারন্যাশনাল (0421-71564), জাবীর ইন্টারন্যাশনাল হোটেল (+8801880-004044), হোটেল আরএস ইন্টারন্যাশনাল (0421-62617) উল্লেখযোগ্য।
কোথায় খাবেন
যশোরের বিখ্যাত জামতলার মিষ্টি, খেজুরের গুড়ের প্যারা সন্দেশ ও ভিজা পিঠা খেয়ে দেখতে পারেন। এছাড়া সময় সুযোগ থাকলে ধর্মতলার মালাই চা এবং চুক নগরের বিখ্যাত চুই ঝাল খাবারের স্বাদও নিতে পারেন।
ফিচার ইমেজ : অভিরুপ পাল
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।