১৮৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত কোদালা চা বাগান (Kodala Tea Estate) বাংলাদেশের প্রথম এবং শীর্ষস্থানীয় চা বাগানের মধ্যে অন্যতম। সবুজ পাহাড় আর প্রাকৃতিক নিঃস্বর্গে সমৃদ্ধ চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া সদর উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কোদালা ইউনিয়নে এই ঐতিহ্যবাহী কোদালা চা বাগানের অবস্থান। চা বাগানের পাশে দিয়ে রূপের মাধুরী ছড়িয়ে বয়ে গেছে লুসাই কন্যা কর্ণফুলী। চা শ্রমিকদের কর্মতৎপরতা, পাখির কিচিরমিচির শব্দ এবং ব্রিটিশ আমলের বাংলো প্রভৃতি যেন ১০০ বছর আগের কোন ঘটনা ধারাবাহিকভাবে পুনরাবৃত্তি করে চলেছে।
স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময়ে লিজের মাধ্যমে এই চা বাগানের মালিকানা পরিবর্তীত হয়। সর্বশেষ ২০০৪ সালে ৭ অক্টোবর ব্র্র্যাক আনুষ্ঠানিকভাবে বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে বাংলাদেশ চা বোর্ডের আওতাধীন কোদালা চা বাগান লিজ নেয়। বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বমোট ১৬২টি চা বাগানের মধ্যে গুণে মানে ও আয়ে কোদালা চা বাগানের অবস্থান তৃতীয়। শুধু চা উৎপাদন নয় ইতিমধ্যে এই চা বাগানটি দর্শনীয় স্থান হিসাবে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। কোদালা চা বাগানের সৌন্দর্যে বুঁদ হতে প্রতিদিন শত শত পর্যটক এখানে ছুটে আসেন।
কিভাবে যাবেন
চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান হয়ে কোদালা চা বাগানের দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম-কাপ্তাই রোডে চলাচলকারী বাসে চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান অথবা সরফভাটা গোডাউন এলাকায় নেমে সিএনজি বা অটোরিক্সা নিয়ে ৫ কিলোমিটার দূরের কোদালা চা বাগান যাওয়া যায়।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম: ঢাকা থেকে সড়ক, রেল এবং আকাশপথে চট্টগ্রাম যাওয়া যায়। ঢাকার সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, ইউনিক, টি আর ট্রাভেলস, গ্রিন লাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী, সোহাগ, এস. আলম, মডার্ন লাইন ইত্যাদি বিভিন্ন পরিবহনের এসি-নন এসি বাস চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। শ্রেণী ভেদে বাসগুলোর প্রতি সীটের ভাড়া ৫০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ঢাকা থেকে ট্রেনে চট্টগ্রাম ভ্রমণ করতে চাইলে কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলস্টেশান হতে সোনার বাংলা, সুবর্ন এক্সপ্রেস, তূর্ণা-নিশীথা, মহানগর প্রভাতী/গোধূলী, চট্রগ্রাম মেইলে যাত্রা করতে পারেন। এছাড়া বেশকিছু বিমান ঢাকা থেকে সরাসরি চট্টগ্রাম ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে।
কোথায় থাকবেন
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান এলাকায় রাত্রিযাপনের জন্য বেশকিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। চট্টগ্রাম শহরে বিভিন্ন মানের অসংখ্য আবাসিক হোটেল পাবেন। পছন্দমত ও বাজেট অনুযায়ী হোটেল নিতে কয়েকটি হোটেল যাচাই করে নিন। প্যারামাউন্ট, হোটেল অবকাশ, হোটেল লর্ডস ইন, হোটেল এশিয়ান এসআর, হোটেল ল্যান্ডমার্ক ইত্যাদি হোটেলে ৮০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে রাত্রিযাপন করতে পারবেন।
কোথায় খাবেন
চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান এলাকায় কিছু স্থানীয় খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্টে সুলভ মূল্যে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। এছাড়াও চট্টগ্রাম শহরে বারকোড ক্যাফে, মিলেঞ্জ রেস্টুরেন্ট, গ্রিডি গাটস, ক্যাফে ৮৮, সেভেন ডেইজ, ধাবা, হান্ডির নাম, গলফ গার্ডেন রেস্টুরেন্ট, কোষ্টাল মারমেইড রেস্টুরেন্ট এন্ড লাউঞ্জ, বোনানজা পোর্ট রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট রয়েছে।
ফিচার ইমেজ: সাদ উল কবির
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।