যশোর (Jessore) জেলা সদরে অবস্থিত যশোর কালেক্টরেট ভবন চত্বর শহরের অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হিসাবে অধিক জনপ্রিয়। কালেক্টরেট ভবনের পাশে ভৈরব নদীর তীরে গড়ে তোলা হয়েছে যশোর কালেক্টরেট পার্ক (Jessore Collectorate Park), যা আগে নিয়াজ পার্ক হিসাবে পরিচিত ছিল। গৌরবোজ্জ্বল অতীতের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের নিরব সাক্ষী এই নিয়াজ পার্ক।

কালেক্টরেট পার্কের পাশে রয়েছে ফ্লাওয়ার পার্ক। বিভিন্ন বাহারি ফুলের সাথে সাথে পার্কের ভেতরে তিন বিঘা জায়গা জুড়ে রয়েছে একটি পুকুর। গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, সূর্যমুখী, ব্লুস্টার, গোলাপ, কসমস, জিনিয়া ইত্যাদি বিভিন্ন প্রজাতির রঙিন ফুল, ইট বিছানো পথ, বসার বেঞ্চ এবং ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা পার্কে আগত দর্শনার্থীদের বিনোদনে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।

কিভাবে যাবেন

কালেক্টরেট পার্ক যেতে চাইলে দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে যশোর জেলা শহরের চলে আসুন। তারপর আপনার অবস্থানের উপর রিকশা নিয়ে কিংবা পায়ে হেঁটে চলে যান কালেক্টরেট পার্কে।

ঢাকা থেকে বাসে যশোর : রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক, রেল এবং আকাশপথে যশোর যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। ঢাকার কল্যাণপুর, গাবতলী এবং কলাবাগান থেকে সোহাগ, হানিফ, এসপি গোল্ডেন লাইন, এম.আর এন্টারপ্রাইজ, দেশ ট্র্যাভেলস, একে ট্র্যাভেলস, গ্রিন লাইন, শ্যামলী ও ঈগল পরিবহণের বেশকিছু এসি/নন-এসি বাস চলাচল করে। যশোরগামী নন-এসি বাসে ভাড়া ৪৮০-৭০০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ৭৫০-২০০০ টাকা।

ঢাকা থেকে ট্রেনে যশোর : ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে বুধবার ছাড়া সপ্তাহের অন্য ৬ দিন সকাল ৮ টা ১৫ মিনিটে আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন যশোর অভিমুখে যাত্রা করে এবং চিত্রা এক্সপ্রেস নামে অন্য একটি আন্তঃনগর ট্রেন সোমবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৬ দিন সন্ধ্যা ৭ টা ও বেনাপোল এক্সপ্রেস বুধবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৬ দিন রাত ১১ঃ১৫ মিনিট এ যশোরের জন্য যাত্রা করে। শ্রেণিভেদে ট্রেনের টিকেটের মূল্য ৪৫৫-১৬২০ টাকা।

এছারা ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ডোমেস্টিক টার্মিনাল থেকে বাংলাদেশ বিমান, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এবং নভোএয়ার নিয়মিত ভাবে ঢাকা-যশোর রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে।

কোথায় থাকবেন

যশোর শহরে থাকার হোটেল গুলোর মধ্যে উন্নতমানের হোটেল গুলোর মধ্যে আছে হোটেল সিটি প্লাজা ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল হাসান ইন্টারন্যাশনাল, জাবির ইন্টারন্যাশনাল হোটেল, হোটেল আর.এস ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল শামস ইন্টারন্যাশনাল ইত্যাদি। এছাড়া রাতে থাকার জন্য যশোরে বেশকিছু সরকারি রেস্ট হাউস এবং মোটামুটি মানের আরও বেশ কিছু হোটেল আছে।

কোথায় খাবেন

যশোরের বিখ্যাত জামতলার মিষ্টি, খেজুরের গুড়ের প্যারা সন্দেশ ও ভিজা পিঠা অবশ্যই খেয়ে দেখুন। এছাড়া চার খাম্বার মোড়ের ‘জনি কাবাব’ থেকে কাবাব, ফ্রাই, চাপ বা লুচি খেতে পারেন। সময় সুযোগ থাকলে ধর্মতলার মালাই চা এবং চুক নগরের বিখ্যাত চুই ঝাল খাবারের স্বাদ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করার কোন মানে নেই!

ফিচার ইমেজ: জাকারিয়া আহমেদ

ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে

ম্যাপে কালেক্টরেট পার্ক

শেয়ার করুন সবার সাথে

ভ্রমণ গাইড টিম সব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানান অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ পাতায় যোগাযোগ করুন।
দৃষ্টি আকর্ষণ : যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই ভ্রমণ গাইডে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ও নানা রকম যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যে ভ্রমণ গাইড দায়ী থাকবে না।