গাইবান্ধা জেলা সদর থেকে ১৬ কিলোমিটার পশ্চিমে সাদুল্লাপুর উপজেলার অন্তর্গত বড় জামালপুর গ্রামে জামালপুর শাহী মসজিদের (Jamalpur Shahi Masjid) অবস্থান। জনশ্রুতি রয়েছে, প্রায় ৬০০ বছর পূর্বে ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে ইরাক থেকে ৩৬০ জন আউলিয়া বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েন। এদের মধ্যে গাইবান্ধা শহরে আগমনকারী সুফি হযরত শাহ জামাল (রঃ) এর তত্ত্বাবধানে এই ঐতিহাসিক শাহী মসজিদটি নির্মিত হয় এবং তাঁর নামানুসারে ইউনিয়ন পরিষদ ও মসজিদের নামকরণ করা হয়। মসজিদের উত্তর পাশে হযরত শাহ জামালের মাজারের অবস্থান।
জামালপুর শাহী মসজিদটি দীর্ঘদিন মাটির চাপা পড়েছিল। পরবর্তীতে ৬০ শতকে গাইবান্ধা মহকুমা প্রশাসক হক্কানী কুতুবউদ্দিন নামের এক ব্যাক্তি মসজিদ অনুসন্ধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। হঠাৎ প্রচন্ড ঝড়ে মসজিদের স্থানে গজিয়ে উঠা বটগাছ ভেঙ্গে পড়লে স্থানীয় লোকজন মসজিদটি দেখতে পায়। এ কারণে অনেকে একে গায়েবি মসজিদ হিসেবে অবহিত করেন। মসজিদের সামনে একটি বিশালাকারের দিঘী রয়েছে, আর দীঘিটিকে ঘিরে নানা লোককথা প্রচলিত আছে।
জামালপুর শাহী মসজিদের নিচের দেয়াল ৭২ ইঞ্চি ও উপরের দেয়াল ৫৬ ইঞ্চি পুরুত্ব বিশিষ্ট। মসজিদের ভিতরে মাত্র ২ কাতারে নামায আদায় করার সুযোগ ছিল তাই মূল অবকাঠামো ঠিক রেখে মসজিদ সম্প্রসারণ ও সংস্কার করা হয়। বর্তমানে দ্বিতল এই শাহী মসজিদে একত্রে প্রায় ৫০০-৭০০ মুসল্লি নামায আদায় করতে পারেন।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে এস আর ট্রাভেলস, আল হামরা পরিবহন, অরিন ট্রাভেলস, শ্যামলী পরিবহণের এসি/নন-এসি বাসে গাইবান্ধা যেতে পারবেন। এসি/নন-এসি এসব বাসের ভাড়া লাগবে ৬০০ থেকে ১১০০ টাকা। এছাড়া ঢাকাস্থ কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে রংপুর অথবা লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে গাইবান্ধা যাওয়া যায়। গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের সিনিয়র আলীম মাদরাসার কাছে জামালপুর শাহী মসজিদের অবস্থান। গাইবান্ধা থেকে বাসে সাদুল্লাপুর পৌঁছে অটোরিক্সা বা সিএনজিতে জামালপুর শাহী মসজিদে পৌঁছাতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় সাধারণ মানের কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। আর গাইবান্ধা শহরে হোটেল আর-রহমান, হোটেল আল- সাইফুল, গণউন্নয়ন কেন্দ্র, হোটেল স্কাই ভিউ এবং বিলাসবহুল এসকেএসইন রিসোর্টের মত আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে।
কোথায় খাবেন
সাদুল্লাপুর উপজেলায় সাধারণ মানের কিছু দেশীয় খাবারের হোটেল আছে।
গাইবান্ধার দর্শনীয় স্থান
গাইবান্ধা জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার, ড্রিমল্যান্ড এডুকেশনাল পার্ক, বালাসী ঘাট ও গাইবান্ধা পৌর পার্ক অন্যতম।
ফিচার ইমেজ: তাসিন আহমেদ
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।