রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের ০৩ নং ওয়ার্ডভুক্ত আলাদিপুর গ্রামে জামাই পাগলের মাজার (Murshid Jamai Pagol Mazar Sharif) অবস্থিত। ধারণা করা হয় ১৯৬০ সালের দিকে নেংটি পরিহিত এক ব্যক্তি বর্তমান মাজার প্রাঙ্গণের শেওরা গাছের নিচে অবস্থান নেন। তাঁর নামে বিভিন্ন অলৌকিক ঘটনা প্রচলিত আছে। কথিত আছে, পাবনা জেলায় এক ধনী ব্যক্তি তার বোবা মেয়েকে গ্রামের এক পাগলের সাথে বিয়ে দেন। বিয়ের রাত শেষ হতেই বোবা মেয়ে কথা বলতে শুরু করেন। কিন্তু সেই পাগল জামাইকে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। অবশেষে তারা রাজবাড়ী জেলার আলাদিপুরে তাঁর সন্ধান পেলেও তিনি আর সংসারে ফিরে যায়নি। এই ঘটনার পর থেকে জামাই পাগল নাম সবার মুখে ছড়িয়ে পড়ে।
জানা যায়, জামাই পাগল যখন আলাদীপুরে আসেন তখন এখানে অনেক মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছিল তখন তিনি সকলকে সারিয়ে তোলেন। ধীরে ধীরে মানুষজন বিভিন্ন বিপদমুক্তির আর্জি নিয়ে তাঁর কাছে আসতে থাকেন। তাকে কেউ কিছু বললে তিনি একই কথার পুনরাবৃত্তি করতেন এবং তাঁর উছিলায় মানুষের সমস্যার সমাধান হতো। জামাই পাগলের মৃত্যুর পর এক আগন্তুক সৎকারের সমস্ত ব্যবস্থা করেন এবং এখানে একটি মাজার গড়ে তোলা হয়। এরপর নুর বাকের শাহ নামের এক ভক্ত এখানে অবস্থান নেন। নুর বাকের শাহেরর মৃত্যুর পর গৌরী পাগলী মাজারটি দেখাশুনা করতেন। মাজার প্রাঙ্গণে একটি সুবিশাল মসজিদ রয়েছে।
মাজারের ভেতরে মুশিদ জামাই পাগল, নুর বাকের শাহ এবং গৌরী পাগলীর পৃথক পৃথক কবর রয়েছে। প্রতিবছর ১৫ই ফাল্গুন ও ৩১ ফাল্গুন দুইটি বড় ঔরস সহ এই মাজারে সর্বমোট ৫টি ঔরস অনুষ্ঠিত হয়।
কিভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকার গাবতলি থেকে রাজবাড়ী পরিবহণ, রাবেয়া, সাউদিয়া কিংবা সপ্তবর্ণা পরিবহণের বাসে রাজবাড়ী যাওয়ার জনপ্রতি টিকেটের মূল্য ৪০০ টাকা। খরচ কমাতে চাইলে বিআরটিসি বাসে ১০০ টাকা ভাড়ায় পাটুরিয়া এসে ২৫ টাকা ভাড়ায় লঞ্চে নদী পার হয়ে পূনরায় ৩০ টাকা বাস ভাড়ায় রাজবাড়ী শহর পৌঁছাতে পারবেন।
রাজবাড়ী জেলা সদর থেকে মুর্শিদ জামাই পাগল মাজারের দূরত্ব মাত্র ৬ কিলোমিটার। রাজবাড়ী জেলা সদর এসে রিক্সা বা ইজিবাইক নিয়ে সহজেই মাজারে যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন
রাজবাড়ী জেলায় কয়েকটি সরকারি ডাক বাংলো এবং বেশকিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। এদের মধ্যে হোটেল গ্র্যান্ড প্যালেস, হোটেল সমবায় রেসিডেন্সিয়াল, হোটেল পার্ক, হোটেল গোল্ডেন, গুলশান বোডিং, প্রাইম হোটেল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
কোথায় খাবেন
রাজবাড়ী জেলায় অবস্থিত বিভিন্নমানের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট থেকে প্রয়োজনীয় খাবারের চাহিদা মেটাতে পারবেন। পান বাজারে অবস্থিত ভাদু শাহার দোকানের চমচম, রেলগেইটের হৈরা শাহের চপ এবং ঝালাই পট্টির কুলফি মালাই রাজবাড়ীর অধিক জনপ্রিয় খাবার।
ফিচার ইমেজ: গুরুকুল লাইভ
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।