কালের বিবর্তনে জমিদারী প্রথার বিলুপ্তি ঘটলেও কুমিল্লা জেলার মুরাদনগরে অবস্থিত জাহাপুর জমিদার বাড়ি (Jahapur Zamidar Bari) ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আজো টিকে আছে। জাহাপুর গ্রামের প্রায় ৪০০ বছর আগে গৌরি মোহনের হাত ধরে এই জমিদার বাড়িটি নির্মিত হলেও ১৮৬২ খিস্টাব্দে এই বাড়িতে জমিদারীর গোড়াপত্তন হয়। ঢাকা জেলার সরোজী মহালের জমিদার রাধিকা মোহন দাস হতে শ্রী গৌরি মোহন রায়ের মাধ্যমে এই পরিবার জমিদারী লাভ করেন।
প্রায় ৩ একর আয়তন বিশিষ্ট জাহাপুর জমিদার বাড়ির প্রবেশ ফটকের দুপাশে দুইটি সিংহ মূর্তি রয়েছে। জমিদার বাড়িতে ৯টি দ্বিতল ও ৩তলা বিশিষ্ট মূল ভবন মিলিয়ে সর্বমোট ১০টি প্রাসাদ আছে। জাহাপুর জমিদার বাড়ির বর্তমান বংশধর প্রফেসর অঞ্জন কুমার রায়ের দাদা জমিদার অশ্বীনি কুমার রায় সর্বশেষ একটি প্রাসাদ, জগন্নাথ দেবের রথ ও মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এই জমিদার বাড়ির সবগুলো ভবনে মুঘল রীতিতে অঙ্কিত নকশা দেখতে পাওয়া যায়। প্রধান তোরণ দিয়ে জমিদার বাড়িতে প্রবেশ করতেই একটি নাট মন্দির দেখতে পাওয়া যায়। নাট মন্দিরের পাশেই রয়েছে স্থায়ীভাবে নির্মিত দুর্গাদেবীর প্রতিমা।
এছাড়া জাহাপুর জমিদার বাড়িতে জমিদারদের ব্যবহৃত বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন শৌখিন খাট, নকশা করা চেয়ার, ফুলদানি, কাঠের তৈরি আসবাবপত্র, রুপার হাতলের ছাতা সহ নানান ধরণের নান্দ্যনিক কারুকার্যমণ্ডিত জিনিস চোখে পড়ে।
কিভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে কোম্পানীগঞ্জগামী সৌদিয়া, তিশা ইত্যাদি বাসে দেবিদ্বারের পান্নারপুল পৌঁছে সেখান থেকে বাখরাবাদ রোডে ১০ কিলোমিটার গেলে জাহাপুর জমিদার বাড়ি পৌঁছে যাবেন।
আর সায়দাবাদ হতে কুমিল্লাগামী বাসে উঠলে ময়নামতি নেমে সেখান থেকে কোম্পানীগঞ্জের বাসে চড়ে দেবিদ্বারের পান্নারপুল নামুন। পান্নারপুল থেকে বাখরাবাদ রোডে ১০ কিলোমিটার দূরে জাহাপুর জমিদার বাড়ি অবস্থিত।
কোথায় থাকবেন
কুমিল্লা শহরে কুমিল্লা ক্লাব, কুমিল্লা সিটি ক্লাবসহ বেশকিছু ভালো মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। এসব হোটেলে ১০০০ থেকে ৩০০০ টাকায় রাত্রি যাপন করতে পারবেন। এছাড়া মাঝারি মানের হোটেলের মধ্যে হোটেল চন্দ্রিমা, হোটেল শালবন, হোটেল আবেদিন (+88-81-76014), হোটেল সোনালী (+88-81-63188), হোটেল নিদ্রাবাগ, আশীক রেস্ট হাউস (+88-81-68781), হোটেল নুরজাহান (+88-81-68737) উল্লেখযোগ্য। এসব হোটেলে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা ভাড়ায় থাকতে পারবেন।
কোথায় খাবেন
কুমিল্লায় বিভিন্ন মানের হোটেল/রেস্টুরেন্ট রয়েছে তাই নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোন রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়ে দেখতে পারেন। আর অবশ্যই আসল মাতৃভান্ডারের রসমালাই খেয়ে দেখবেন।
ফিচার ইমেজ: মোবাশ্বের রোমান
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।