কক্সবাজার গিয়েছেন কিন্তু হিমছড়িতে যাননি কিংবা হিমছড়ির নাম শুনেন নি এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কক্সবাজার থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের কোলে হিমছড়ি অবস্থিত। হিমছড়ির ছোট বড় ঝর্ণা, পাহাড় আর ফটোগ্রাফিক সমুদ্রতট পর্যটকদের বিমোহিত করে রাখে। শীতল পানির ঝর্ণা, মেরিন ড্রাইভ রোড এবং বিস্তীর্ণ সমুদ্র সৈকত দেখতে আপনাকে হিমছড়ি আসতেই হবে। সারাবছরই হিমছড়িতে যেতে পারবেন তবে বর্ষায় ঝর্ণাগুলে পূর্নতা পায়।
কি দেখবেন
হিমছড়ি ইকোপার্কে রয়েছে ছোট বড় বেশ কিছু ঝর্ণা, প্রাকৃতিক নিসর্গ, বিস্তীর্ণ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, সবুজে ঘেরা মেরিন ড্রাইভ রোড আর পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে সূর্য্যাস্ত উপভোগ করার ব্যবস্থা। এছাড়াও পাহাড়ের পাদদেশে ইকোপার্কের প্রবেশ মুখের বার্মিজ মার্কেট থেকে পছন্দের কেনাকাটা করে নিতে পারেন সহজেই।
কিভাবে যাবেন
হিমছড়ি যেতে হলে প্রথমে ঢাকা থেকে কক্সবাজার আসতে হবে। কক্সবাজার আসতে বিভিন্ন ধরণের এসি-নন এসি বাস সার্ভিস রয়েছে বাস ভেদে ভাড়া জনপ্রতি ৯০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া ঢাকা থেকে ট্রেনে করে চট্টগ্রাম এসে তারপর বাসে করে কক্সবাজার যেতে পারবেন। আর যদি বাজেট নিয়ে কোন টেনশন না থাকে তবে কক্সবাজার যাবার জন্য আকাশ পথ বেছে নিতে পারেন।
কক্সবাজার থেকে হিমছড়ি
কক্সবাজারের যে কোন জায়গা থেকে ইজিবাইক/অটো অথবা সিএনজি দিয়ে হিমছড়ি ঘুরে আসা যায়। রিসার্ভ নিতে চাইলে সিজন অনুযায়ী ভাড়া লাগবে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। এছাড়া কলাতলী মোড় থেকে লোকাল ইজিবাইকে/সিএনজিতে করে হিমছড়ি যাওয়া যায়। আপনারা একসাথে কয়েজন হলে খোলা জীপে করেও ঘুরে আসতে পারবেন।
হিমছড়ি ও ইনানী বীচ একই রোড ধরে। তাই আপনার প্ল্যানে যদি ইনানী বীচ যাবার পরিকল্পনা থাকে তাহলে একসাথে দুই জায়গা দেখার জন্যে গাড়ি নেওয়া সুবিধাজনক হবে। রিসার্ভ গাড়ি ঠিক করার সময় অবশ্যই দড়দাম করে নিবেন। কোথায় কতক্ষণ সময় ব্যয় করবেন ও কি কি ঘুরে দেখবেন তা আগেই আলোচনা করে নিবেন।
হিমছড়ি ইকোপার্ক পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশের জন্য ২০ টাকার টিকেট কাটতে হবে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার আরো বিস্তারিত তথ্য জানতে পড়ুন আমাদের কক্সবাজার যাওয়ার উপায় গাইডলাইন।
কোথায় থাকবেন
কক্সবাজারের খুব কাছে হওয়ায় কক্সবাজার হোটেলে থাকাই সবচেয়ে সুবিধাজনক। ১,৫০,০০০ পর্যটকদের আবাসনের কথা ভেবে কক্সবাজার গড়ে উঠেছে প্রায় পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ। এগুলোর মধ্যে মারমেইড বিচ রিসোর্ট, সায়মন বিচ রিসোর্ট, ওশেন প্যারাডাইজ, লং বীচ, কক্স টুডে, সী প্যালেস, সী গাল, কোরাল রীফ, নিটোল রিসোর্ট, আইল্যান্ডিয়া, বীচ ভিউ, সী ক্রাউন, ইউনি রিসোর্ট, উর্মি গেস্ট হাউজ, কোরাল রীফ, ইকরা বিচ রিসোর্ট, অভিসার, মিডিয়া ইন, কল্লোল, হানিমুন রিসোর্ট, নীলিমা রিসোর্ট উল্লেখযোগ্য। এসব হোটেলের ফেইসবুক পেইজ কিংবা অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে জেনে নিতে পারেন বিস্তারিত। সিজন ভেদে এইসব হোটেলের ভাড়ার তারতম্য হয়।
তাই অল্প খরচে খরচে থাকতে চাইলে একটু ভিতরের দিকে থাকতে পারেন। লাবনী বিচের ঐদিকে থাকলে তুলনামূলক কম ভাড়ায় হোটেল ও কটেজ পাওয়া যায়। বিচ থেকে একটু দূরে ও মেইন রোড থেকে ভিতরের দিকের হোটেল ও রিসোর্ট পাবেন কম টাকায়।
কোথায় খাবেন ও কি খাবেন
আনায়াসেই ৩-৪ ঘন্টায় হিমছড়ি থেকে ঘুরে আসা যায় তাই চাইলে হালকা শুকনো খাবার সাথে রাখতে পারেন কিংবা পুনরায় কক্সবাজার ফিরে খেতে পারেন। কক্সবাজারে খাবার জন্য বিভিন্ন মানের রেস্তোরাঁ রয়েছে। মধ্যম মানের রেস্টুরেন্টের মধ্যে রোদেলা, ঝাউবন, ধানসিঁড়ি, পৌষি, নিরিবিলি ইত্যাদি উল্লেখ করার মত।
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।