নারায়ণগঞ্জ জেলার হাজীগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে অবস্থিত হাজীগঞ্জ দুর্গ (Hajiganj Fort) মুঘল আমলে নির্মিত একটি ঐতিহাসিক জল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। তৎকালীন সময়ে হাজীগঞ্জ খিজিরপুর নামে পরিচিত ছিল, ফলে অনেকেই একে খিজিরপুর দুর্গ নামে আখ্যায়িত করেছেন। সপ্তদশ শতকের দিকে মুঘল সুবাদার ইসলাম খান কর্তৃক ঢাকায় মুঘল রাজধানী স্থাপনের পর মগ ও পর্তুগীজ জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে নির্মিত তিনটি জল দুর্গ বা ট্রায়াঙ্গল অব ওয়াটার ফোর্টগুলোর মধ্যে হাজীগঞ্জ অন্যতম। আর অপর দুই দুর্গের নাম সোনাকান্দা দুর্গ এবং ইদ্রাকপুর দুর্গ। ঢাকা থেকে সড়কপথে হাজীগঞ্জ দুর্গের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার।
হাজীগঞ্জ দুর্গের নির্মাণ কাল নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কারো মতে ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে দুর্গটি নির্মিত হয়। আবার কেউ কেউ মনে করেন ১৬৫০ থেকে ১৬৬০ সালের মধ্যে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। চতুর্ভুজাকৃতির হাজীগঞ্জ দুর্গের দৈর্ঘ্য ২৫০ মিটার এবং প্রস্থ ২০০ মিটার। পঞ্চভুজ আকৃতির সীমানা প্রাচীরের দেয়ালে বন্দুক রেখে গুলি করার ছিদ্র রয়েছে। দুর্গের চারকোণে আছে ৪টি বুরুজ। এছাড়া প্রাচীরের উপরে উঠার জন্য সিঁড়ি এবং এক কোণে একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে কামান রাখার বেদি রয়েছে। ১৯৫০ সালে এই হাজীগঞ্জ কেল্লাটিকে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত করে বিভিন্ন ধাপে সংস্কার করে বর্তমান রূপ দেয়া হয়।
কিভাবে যাবেন
ঢাকার গুলিস্তান থেকে নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার বিভিন্ন এসি/নন-এসি আস সার্ভিস রয়েছে। এছাড়া বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে সংলগ্ন হানিফ ফ্লাইওভারের কাছে বন্ধু, আনন্দ এবং উৎসব বাসের কাউন্টার আছে। এসব বাসের কোন একটিতে নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া এসে রিকশা বা ইজিবাইকে হাজীগঞ্জ দুর্গ দেখতে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী এবং আশে পাশের জেলা হতে দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসা যায় তাই রাত্রিযাপন নিয়ে মোটেও ভাবতে হবে না। তবুও প্রয়োজনে রাতে থাকতে চাইলে নারায়নগঞ্জ সদরে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেলে রাত কাটাতে পারবেন।
কোথায় খাবেন
নারায়ণগঞ্জের বিশেষ খাবারের মধ্যে কাইকারটেক হাটের পুতা মিষ্টি খেয়ে দেখতে পারেন।
ফিচার ইমেজ: এম শহীদ
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।