মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে রংপুর বিভাগে প্রতিষ্ঠিত প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (Hajee Mohammad Danesh Science & Technology University)। তেভাগা আন্দোলনের জনক কৃষকনেতা হাজী মোহাম্মদ দানেশের নামানুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রাখা হয়। ১৯৭৬ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট হিসেবে এবং তখন এখান থেকে কৃষিতে ডিপ্লোমা ডিগ্রী প্রদান করা হত। এরপর ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এটি স্নাতক পর্যায়ের কৃষি কলেজে উন্নীত হয়। ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এই কৃষি কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার ঘোষণা দেয়া হয়। এরই ফলশ্রুতিতে ২০০২ সালের ৮ এপ্রিল মহামান্য রাষ্ট্রপতির প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে স্থাপিত হয় হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৩০ একর আয়তনের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৮টি অনুষদের অধীনে ২২ টি বিষয়ে সনদ প্রদান করা হয়।

সবুজ গাছপালার সমারোহের মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে লাল-সাদা ইটের সমন্বয়ে তৈরি দৃষ্টিনন্দন ভবন, জিমন্যাশিয়াম, ক্যান্টিন, ডি-বক্স চত্বর, টিএসসি, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, ছাত্রছাত্রী হোস্টেল, সেমিনার কক্ষ এবং দুইটি অডিটরিয়াম।

এছাড়া আরো আছে শিশুপার্ক, পোষ্ট অফিস, ব্যাংকের শাখা, সার্বাক্ষণিক ইন্টারনেট সুবিধা, খেলার মাঠ, মেডিক্যাল সেন্টার, বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং প্রায় ২৫ হাজার বইয়ের সমৃদ্ধ লাইব্রেরি।

কিভাবে যাবেন

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়টি ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। দিনাজপুর শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। দিনাজপুর শহর থেকে অটোরিক্সা বা সিএনজি ভাড়া করে অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে চড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে পারবেন।

ঢাকা থেকে বাস এবং ট্রেনে দিনাজপুর যাওয়ার যায়। ঢাকার গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে দিনাজপুরগামী বাস সার্ভিসের মধ্যে রয়েছে নাবিল পরিবহন, এস আর ট্রাভেলস, এস এ পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ,কেয়া পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন ইত্যাদি। নন-এসি এবং এসি বাস ভাড়া মানভেদে ৬০০ থেকে ১,৩০০ টাকা। এছাড়া রাজধানীর উত্তরা থেকে বেশকিছু বাস দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তঃনগর দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেন দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে রাত ৮ টায় ছেড়ে যায়। আন্তঃনগর ট্রেন একতা এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে সকাল ১০ টা ১০ মিনিটে ছাড়ে। আর পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা থেকে ছেড়ে যায় ১০ টা ৪৫ মিনিটে। শ্রেনীভেদে এইসব ট্রেনের টিকেট কাটতে ৫৩৫ টাকা থেকে ১,৫৯৯ টাকা লাগে।

কোথায় থাকবেন

দিনাজপুর শহরে ভাল মানের হোটেলে থাকতে চাইলে পর্যটন মোটেলে (0531-64718) যোগাযোগ করতে পারেন। পর্যটনের হোটেলে ঢাকা থেকে বুকিং দিতে ফোন করতে পারেন (9899288) থেকে 91 পর্যন্ত। পর্যটন মোটেলে ১৫০০ থেকে ২২০০ টাকায় রাত্রি যাপন করতে পারবেন।

অথবা খোঁজ নিতে পারেন দিনাজপুরের সাধারণ মানের হোটেলগুলিতে। সাধারণ মানের আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল ডায়মন্ড (0531-64629), নিউ হোটেল (0531-68122), হোটেল আল রশিদ (0531-64251), হোটেল রেহানা (0531-64414), হোটেল নবীন (0531-64178), ইত্যাদিতে ২০০ থেকে ১০০০ টাকায় রাত্রি যাপন করতে পারবেন।

কোথায় খাবেন

দিনাজপুরে রুস্তম, ফাইভ স্টার, দিলশাদ হোটেলে গরুর ভুনা মাংস, কাঠি কাবাব ইত্যাদি খেয়ে দেখতে পারেন। এছাড়া দিলশাদ রেস্তোরাঁর পাটিসাপটার বেশ সুনাম রয়েছে। এছাড়া পুলাহাট বিসিক এলাকায় আবুল হোটেলে ভাত, গরু কিংবা মুরগির মাংস, ডাল আর সবজি দিয়ে আহার সেরে নিতে পারেন।

ফিচার ইমেজ: রেহান নয়ন

ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে

ম্যাপে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

শেয়ার করুন সবার সাথে

ভ্রমণ গাইড টিম সব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানান অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ পাতায় যোগাযোগ করুন।
দৃষ্টি আকর্ষণ : যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই ভ্রমণ গাইডে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ও নানা রকম যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যে ভ্রমণ গাইড দায়ী থাকবে না।