টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পুর্বে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় রাধা কৃষ্ণের ভক্তদের পুণ্যস্থান গুপ্ত বৃন্দাবন (Gupta Brindaban) গ্রাম অবস্থিত। এখানে প্রতিবছর চৈত্র মাসের ১২ তারিখ প্রায় ৭০০ বছরের পুরনো একটি কালো তমাল গাছকে কেন্দ্র করে জমজমাট বারুনি মেলার আয়োজন করা হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাড়াও এই উৎসবে আশেপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে সকল ধর্মের দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে।
গুপ্ত বৃন্দাবন গ্রামের নামকরণ এবং তমাল গাছটিকে ঘিরে নানান কল্পকথা প্রচলিত আছে। এলাকার স্থানীয় হিন্দু, আদিবাসি ও বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের লোকেরা বিশ্বাস করেন, মধুরায় শ্রীকৃষ্ণের উপর কংশ রাজার অত্যাধিক অত্যাচারের কারনে রাধা এবং ১৫০০ জন গোপিনীকে নিয়ে শ্রীকৃষ্ণ পালিয়ে আসেন। এই ঘটনার কারণে স্থানটি গুপ্ত বৃন্দাবন নামে পরিচয় লাভ করে। তবে ইতিহাস হতে পাওয়া তথ্য মতে, এই জায়গার পূর্ব নাম বৃন্দাবন। গুপ্ত বংশীয় বিভিন্ন নিদর্শন এই স্থান হতে প্রাপ্তির ফলে বৈষ্ণব ধর্মের প্রচারক ১৫৭৭ সালে জায়গাটির নাম দেন গুপ্ত বৃন্দাবন। আর রাধা কৃষ্ণের ভক্তরা বিশ্বাস করে, গুপ্তবৃন্দাবনের তমাল গাছের ডালে রাধা কৃষ্ণ দোল খেতেন ও অভিসারে মিলিত হতেন। তমাল গাছের উত্তর পাশে একটি রাধাগোবিন্দ মন্দির রয়েছে। এছাড়া এখানে আরো আছে বিভিন্ন প্রাচীন মূর্তি ও মন্দির। প্রতিবছর বাংলা সনের চৈত্র মাসে এখানে বাৎসরিক মেলা ও কীর্তনযজ্ঞের আয়োজন করা হয়।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে নিজস্ব পরিবহন অথবা বাসে জয়দেবপুর-টাঙ্গাইল-জামালপুর মহাসড়ক দিয়ে সরাসরি ঘাটাইল উপজেলায় যাওয়া যায়। এছাড়া টাঙ্গাইল হয়েও ঘাটাইলে যেতে পারবেন। ঘাটাইল উপজেলা সদর থেকে সিএনজি ভাড়া নিয়ে ২৭ কিলোমিটার দূরে গুপ্ত বৃন্দাবন গ্রামে যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন
রাত্রিযাপনের জন্য ঘাটাইলের চেয়ে টাঙ্গাইল শহরে থাকা বেশী সুবিধাজনক। টাঙ্গাইল শহরে বিভিন্ন ধরণের আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে। আকাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল আল ফয়সাল, ব্যুরো হোটেল, আনসারি প্যালেস, হোটেল প্রিন্স ও হোটেল শান্তি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও রয়েছে সার্কিট হাউজ ও জেলা পরিষদের ডাক বাংলোর মতো সরকারী আবাসনের ব্যবস্থা।
কোথায় খাবেন
ঘাটাইলে খাওয়ার জন্য বিভিন্ন মানের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট আছে। এদের মধ্যে হোটেল তাজমহল, ফুড ভিলেজ, হোটেল ৫ স্টার ও প্রাপ্তি রেস্তোরা উল্লেখযোগ্য। আর অবশ্যই টাঙ্গাইল ঘুরতে আসলে পাঁচআনি বাজারের বিখ্যাত পোড়াবাড়ীর চমচমের স্বাদ নিতে ভুলবেন না।
টাঙ্গাইল জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
টাঙ্গাইল জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে ২০১ গম্বুজ মসজিদ, এসপি পার্ক, ধনবাড়ি, পাকুটিয়া ও মহেরা জমিদার বাড়ী এবং মধুপুর জাতীয় উদ্যান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।