দুবলার চর (Dublar Char) সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের দক্ষিণ দিকে, হিরণ পয়েন্ট থেকে দক্ষিণ-পূর্বে এবং কটকার থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত একটি ছোট্ট সুন্দর দ্বীপ। দুবলার চর হিন্দুধর্মালম্বীদের পূণ্যস্নান, রাসমেলা এবং হরিণের জন্য সর্বাধিক সুপরিচিত। কুঙ্গা ও মরা পশুর নদের মাঝখানে জেগে উঠেছে বিচ্ছিন্ন এই দুবলার চর।
দুবলার চরের সকল পরিবারই মৎস্যজীবী তাই একে জেলে পল্লী বলা চলে। মাছ ধরার পাশাপাশি এখানে চলে শুঁটকি তৈরীর কাজ। বর্ষাকালে ইলিশ শিকারের জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বাগেরহাট, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা এবং খুলনা থেকে দলবেঁধে জেলেরা দুবলার চরে এসে সাময়িক বসতি গড়ে তোলে। দুবলার চর থেকে শুঁটকি নিয়ে চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জের পাইকারী বাজারে সংরক্ষণ এবং বিক্রয় করা হয়। সুন্দরবনের বাগেরহাটস্থ পূর্ব বিভাগের সদর দপ্তর থেকে মাছ সংগ্রহের অনুমতি নিয়েই শুধুমাত্র দুবলার চরে জেলেরা প্রবেশ করতে পারেন।
প্রতি বছর কার্ত্তিক মাসে (নভেম্বর) দুবলার চরে তিনদিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাসমেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় শত বছরের পুরনো এই রাসমেলা দেখার জন্যে দূর-দূরান্ত থেকে দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা ছুটে আসেন। বিচ্ছিন্ন এই দুবলার চরের রাশমেলা দেখার ইচ্ছে থাকলে আগে থেকেই পরিকল্পণা করে রাখুন। এই অভিজ্ঞতা আজীবন মনে থাকবে আপনার।
সাধারণত দুবলার চরে যাওয়ার জন্যে যে ট্রলার বা ট্যুরিস্ট ভ্যাসেল ভাড়া করা হয় সেখানেই রাতে থাকা ও খাওয়া দাওয়ার সুবিধা ও অন্যসব সবকিছুর ব্যবস্থা থাকে।
দুবলার চর কিভাবে যাবেন
ঢাকার গাবতলী কিংবা সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সাকুরা পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, মেঘনা পরিবহন, পর্যটক পরিবহন ইত্যাদি বাসে সহজেই বাগেরহাট আসতে পারবেন। এরপর বাগেরহাটের মংলা বন্দর থেকে দুবলার চরে যাবার নৌযান ভাড়া করতে পারবেন। তবে সবচেয়ে ভাল হয় সায়দাবাদ বাস স্ট্যান্ড থেকে সরাসরি মংলা যাওয়ার বাসে চড়া। এক্ষেত্রে সুন্দরবন ও পর্যটক সার্ভিসের বাসে জনপ্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ভাড়ায় যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
দুবলার চরে থাকতে চাইলে যে ট্যুরিস্ট লঞ্চে যাবেন সেখানেই থাকার ব্যবস্থা থাকে। এছাড়া হিরণপয়েন্টের নীলকমল, টাইগার পয়েন্টের কচিখালী এবং কাটকায় বন বিভাগের রেস্ট হাউজে রাত্রিযাপন করতে পারবেন। নীলকমল ও কচিখালীতে কক্ষ প্রতি ৩০০০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। তবে কচিখালীতে ৪ কক্ষ ভাড়া নিলে ১০,০০০ টাকায় থাকতে পারবেন। কটকা রেস্ট হাউজে রুম নিতে লাগে ২০০০ টাকা। বিদেশি ভ্রমণকারীদের এই সব রেস্ট হাউজে রাত কাটাতে রুম প্রতি গুনতে হবে ৫০০০ টাকা।
আর যা যা দেখতে পারেন:
- কটকা সমুদ্র সৈকত
- হিরণপয়েন্ট
- নিঝুম দ্বীপ
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।