বাগেরহাট জেলা থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের চুনাখোলা গ্রামে প্রাচীন পুরাকীর্তির এক অনন্য নিদর্শন চুনাখোলা মসজিদ (Chuna Khola Mosque) অবস্থিত। ধারণা করা হয়, ১৫ শতকে হযরত খান জাহান (রঃ) এর এক অনুগত কর্মচারী মধ্যযুগীয় স্থাপত্যে এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। হযরত খান জাহান আলী (রঃ) বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যবহারের প্রয়োজনীয় চুন উৎপাদনের জন্য চুনখোলা কেন্দ্র স্থাপন করেন। ফলে পোড়ামাটির অলংকরণে নির্মিত মসজিদটি চুনাখোলা মসজিদ হিসেবে পরিচিতি পায়।
সুলতানী আমলে নির্মিত অর্ধগম্বুজ বিশিষ্ট বর্গাকার চুনখোলা মসজিদ বাইরের দিক ৪৯ ফুট, অভ্যন্তরীণভাগ ২৫ ফুট এবং বাইরের প্রতি দেয়ালের দৈর্ঘ্য ১২.৫০ মিটার। মসজিদের চার কোণায় ৪টি মিনার, পশ্চিমের দেয়ালে কারুকার্যখচিত ৩টি মিহরাব এবং পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ দিকে সর্বমোট ৫টি প্রবেশদ্বার রয়েছে। মসজিদের দেয়ালের ফুল, লতা পাতাসহ বিভিন্ন মোটিফের পোড়ামাটির অলংকরণ বিশেষভাবে লক্ষণীয়। ১৯৭৫ সালে মসজিদটিকে ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৮৩ সালে ইউনেস্কো ঐতিহাসিক চুনখোলা মসজিদকে “বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য” হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে খুলনার বাগেরহাট যাওয়া যায়। ঢাকার গুলিস্থান ও সায়েদাবাদ থেকে আরিচা বা মাওয়া ফেরিঘাট হয়ে মেঘনা, শাকুরা, পর্যটক, হানিফ, সোহাগ ও ঈগল পরিবহনের বাসে বাগেরহাট যেতে পারবেন। কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে খুলনাগামী আন্তঃনগর কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস, চিত্রা, রূপসা কিংবা সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে খুলনা হয়ে বাগেরহাট যেতে পারবেন।
বাগেরহাট শহর থেকে রিকশা নিয়ে ষাট গম্বুজ মসজিদ থেকে মাত্র কয়েক মিনিটের হাঁটা দূরত্বে অবস্থিত চুনাখোলা মসজিদ পৌঁছাতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
বাগেরহাট শহরে অবস্থিত বিভিন্ন আবাসিক হোটেলের মধ্যে মমতাজ হোটেল, হোটেল মোহনা, হোটেল আল আমিন, রেসিডেন্সিয়াল হোটেল, হোটেল অভি, হোটেল ফুয়াদ আবাসিক, জারিফ আবাসিক, হোটেল ধানসিঁড়ি, সার্কিট হাউজ, ডাক বাংলো, ষাট গম্বুজ প্রত্নতত্ত্ব গেস্ট হাউজ ও সুন্দরবন রিসোর্ট উল্লেখযোগ্য।
কোথায় খাবেন
বাগেরহাটের বিবি হোটেল, পর্যটন রেস্তোরাঁ, বিসমিল্লাহ হোটেল, ব্ল্যাক চেরী, রাধুনি হোটেল ও ধানসিঁড়ি হোটেলের মতো বেশকিছু রেস্তোরাঁ রয়েছে। বাগেরহাটের জনপ্রিয় খাবারের মধ্যে চুইঝাল দিয়ে গরুর গোস্ত, অনিকের রসগোল্লা, সেমাই পিঠা ও নারিকেল চিংড়ি অন্যতম।
বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান
বাগেরহাটের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে ষাট গম্বুজ মসজিদ, খান জাহান আলীর মাজার, নয় গম্বুজ মসজিদ, বাগেরহাট জাদুঘর, কচিখালী সমুদ্র সৈকত, চন্দ্রমহল ইকো পার্ক ও মংলা বন্দর উল্লেখযোগ্য।
ফিচার ইমেজ: সাজেদুর রহিম
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।