বান্দরবান জেলা শহর থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার দূরে চিম্বুক (Chimbuk Hill) পাহাড়ের অবস্থান। চম্বুক পাহাড় চূড়াতেই রয়েছে চিম্বুক পর্যটন কেন্দ্র। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ২৫০০ ফুট উঁচু চিম্বুক পাহাড়ে যাওয়ার আঁকাবাঁকা রাস্তার দুই পাশের চমৎকার প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং সর্পিল সাঙ্গু নদীর সৌন্দর্য মনকে প্রশান্ত করে। পাহাড়ের সর্বোচ্চ উচ্চতায় দাঁড়িয়ে নৈস্বর্গিক প্রকৃতিক রূপের সুধা পান করতে করতে মেঘের ভেলা চেপে হারিয়ে যাওয়া যায় অপার্থিব জগতের গভীরে। আর বর্ষায় চিম্বুক পাহাড় থেকে সাজেকের মত দুরন্ত মেঘের উড়াউড়ি দেখা যায়, আর ভাগ্য ভাল হলে হাত বাড়িয়ে নেয়া যায় মেঘের স্পর্শ। এছাড়া চিম্বুক পাহাড়ে যাওয়ার পথে মিলনছড়ি ও শৈলপ্রপাত ঝর্ণা ঘুরে দেখতে পারবেন। আর নীলগিরি যেতে চাইলে নীলগিরি যাবার পথেই চিম্বুকের অবস্থান। চিম্বুক থেকে আরও ২০ কিলোমিটার সামনে গেলে নীলগিরি।

যাওয়ার উপায়

দেশের যে প্রান্তেই আপনার অবস্থান হোক না কেন চিম্বুক যেতে চাইলে বান্দরবান চলে আসুন। ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে বান্দরবান (Bandarban) যাওয়া যায়। ঢাকার কলাবাগান, সায়েদাবাদ, গাবতলী এবং ফকিরাপুল থেকে শ্যামলি, হানিফ, ইউনিক, এস আলম, ডলফিন ইত্যাদি পরিবহণের বাস প্রতিদিন বান্দরবানের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। রাত ১০ টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে যেকোনো একটি বাসে চড়ে সহজেই বান্দরবান আসতে পারেন। এসব নন-এসি ও এসি বাসের জনপ্রতি ভাড়া ৭০০ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে। রাত ৯-১০টায় রওনা দিলে সকাল ৭টার মধ্যে পৌঁছে যাবেন বান্দরবান। এছাড়া ট্রেন বা এয়ারে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম গিয়ে সেখান থেকে বান্দরবান যেতে পারবেন।

চট্টগ্রামের বদ্দারহাট বাস স্ট্যান্ড থেকে পূবালী ও পূর্বানী নামের দুটি বাস বান্দারবানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ দুটি বাসে জনপ্রতি ২২০ টাকা ভাড়া লাগে।

বান্দরবান থেকে চিম্বুক: বান্দরবান জেলা শহরের বাস স্ট্যান্ড হতে চাঁদের গাড়ি, জীপ বা সিএনজি ভাড়া করে চিম্বুক যাওয়া যায়। বান্দরবান শহর থেকে যেতে প্রায় ১ ঘন্টা ৩০ মিনিটের মত সময় লাগবে।এক্ষেত্রে মনে রাখা জরুরী বিকেল ৪ টার পর থেকে চিম্বুক-থানচি রুটে কোন গাড়ি চলাচল করে না। তাই চিম্বুক পাহাড়ে ঘুরতে গেলে তার আগেই যেতে হবে। সাধারণত পর্যটকরা চিম্বুক, নীলগিরি, শৈলপ্রপাত ঝর্ণা এইসব একসাথে ঘুরে দেখার জন্যে গাড়ি ভাড়া করে থাকে। বিস্তারিত জানতে নিচের লিংক থেকে পড়ে নিতে পারেন।

পড়ুন : বান্দরবান ভ্রমণের ট্যুর প্ল্যান

কোথায় থাকবেন

পাহাড়ী এলাকা ও দূর্গম হওয়ার কারণে চিম্বুকে কোন থাকার হোটেল নেই। তবে জেলা প্রশাসকের তত্ত্ববধানে একটি রেস্টহাউস পরিচালিত হয়ে আসছে। তবে চিম্বুক পর্যটন থেকে আরও দূরে নীলগিরি অথবা আগে বিলাসবহুল সাইরু রিসোর্ট আছে। কম খরচে থাকতে চিয়ালে বান্দরবান জেলা শহরে বিভিন্ন মানের বেশকিছু আবাসিক হোটেল ও রিসোর্ট আছে। এসব হোটেল ও রিসোর্টে সময়ানুপাতে ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় রাতে থাকতে পারবেন। বান্দরবানের রিসোর্ট ও হোটেল নিয়ে নিচের লিংক থেকে বিস্তারিত জেনে নিন।

পড়ুন : বান্দরবানের হোটেল ও রিসোর্ট

কোথায় খাবেন

চিম্বুক পাহাড়ের পাশে সেনাবাহিনী কতৃক পরিচালিত একটি ক্যান্টিন চালু আছে। এই ক্যান্টিনে সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবার খাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া চিম্বুক পর্যটন কেন্দ্রের সামনে আদিবাসীদের খাবার হোটেল আছে। আগে থেকে বলে রাখলে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করে দিবে।

ফিচার ইমেজ : মো জাহাঙ্গীর হোসেন

ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে

ম্যাপে চিম্বুক

শেয়ার করুন সবার সাথে

ভ্রমণ গাইড টিম সব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানান অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ পাতায় যোগাযোগ করুন।
দৃষ্টি আকর্ষণ : যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই ভ্রমণ গাইডে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ও নানা রকম যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যে ভ্রমণ গাইড দায়ী থাকবে না।