নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার বুধপাড়ায় প্রায় ৫৩০ বছরের পুরনো বুধপাড়া কালীমন্দির (Budhapara Sree Sree Kalimata Mondir) অবস্থিত। মন্দির স্থাপনের সময়কালে এই উপমহাদেশে নবাবী আমল চলছিল। আর নবাব আলিবর্দি খানের আমলে বর্গীয় হাঙ্গামা শুরু হয়। বর্গীদের অন্যায় অত্যাচার থেকে বাঁচতে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের খাগড়া থেকে ৬০ ঘর কংস বণিক নাটোরের বুধপাড়ায় এসে বসতি স্থাপন করে। সেসময় তারা কালীপূজায় অর্চনার জন্য খড়ের ঘরের একটি মন্দির তৈরি করেন। যা বর্তমানে বুধপাড়া কালীমন্দির হিসেবে পরিচিত। ফলে সমগ্র দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই মন্দিরের রয়েছে ঐতিহাসিক গুরুত্ব।
বাংলা ১৩৩২ সনে খড়ের তৈরি মন্দিরটিকে পাকা দালানে রুপান্তরিত করা হয়। ততীতে মন্দিরের নামে ১৫০ বিঘার অধিক জমি থাকলে বর্তমানে কেবল কালী মন্দির ও গোবিন্দ মন্দির চত্বর মিলিয়ে সর্বমোট ৮ বিঘা জমির অস্তিত্ব আছে। বিভিন্ন পূজা পার্বণ ছাড়াও সারাবছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বুধপাড়া কালীমন্দির দর্শনে আসেন। প্রতি বছর কার্তিক মাসে এই মন্দিরে মহাধুমধামে কালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। আর পূজা উপলক্ষে আয়োজিত মেলায় থাকে সকল শ্রেণী পেশা ধর্ম নির্বিশেষে বিভিন্ন বয়সের দর্শনার্থীদের আনাগোনা।
কিভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকা থেকে ঈশ্বরদী-বাঘা রুটে চলাচলকারী বাসে বাঘা নামক স্থানে নেমে সেখান থেকে সিএনজি নিয়ে লালপুর যাওয়া যায়। এছাড়া ঢাকা হতে রাজশাহী, নাটোর কিংবা চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী বাসে বনপাড়া বাইপাস মোড়ে নেমে সেখান থেকে স্থানীয় বাস বা সিএনজি চড়ে সহজে বুধপাড়া কালীমন্দির যাওয়া যায়। বনপাড়া মোড় হতে বুধপাড়া কালীমন্দিরের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার।
কোথায় থাকবেন
নাটোরে মোটামুটি মানের কতগুলো আবাসিক হোটেল ও বোডিং রয়েছে। হোটেল ভি.আই.পি ও হোটেল রুখসানায় সিংগেল কিংবা ডাবল কেবিনের ভাড়া ২৫০ থেকে ৬০০ টাকা। এছাড়া যোগাযোগ করতে পারেন সার্কিট হাউস নাটোর, নাটোর সদর ডাক বাংলো, হোটেল প্রিন্স, নাটোর বোর্ডিং, হোটেল রাজ কিংবা হোটেল মিল্লাতে।
কোথায় খাবেন
নাটোরের বিভিন্ন মানের খাবার হোটেল/রেস্টুরেন্টে প্রয়োজনীয় খাবার খেতে পারবেন। কম খরচে খাওয়ার জন্য ইসলামিয়া পঁচুর হোটেল ও রেলস্টেশনের কাছে নয়ন হোটেলের খাবারের বেশ সুনাম রয়েছে। এছাড়া নাটোর ভ্রমনকালে চলনবিল এবং রানী ভবানী সুস্বাদু মাছ খাওয়ার সুযোগ মিস করা মোটেও ঠিক হবে না। সেই সাথে নাটোরের বিখ্যাত কাঁচাগোল্লা খেয়ে নিয়েও আসতে পারেন।
ফিচার ইমেজ: দীপাঞ্জন প্রামাণিক
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।