পুরান ঢাকার চকবাজারের বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে মুঘল আমলের এক ঐতিহাসিক নিদর্শন বড় কাটরা (Bara Katra) অবস্থিত। ১৬৪১ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট শাহজাহানের পুত্র শাহজাদা শাহ সুজার নির্দেশে প্রধান স্থপতি মীর আবুল কাসেম এই স্থাপনাটি নির্মাণ করেন। আবুল কাসেমকে সে সময় ‘মীর-ই-ইমারত’ নামে আখ্যায়িত করা হত। শাহজাদা শাহ সুজার বসবাসের জন্য বড় কাটরা নির্মিত হলেও পরবর্তী সময়ে এটি মুসাফিরখানা হিসাবে ব্যবহৃত হতে থাকে।

বড় কাটরার উত্তর ও দক্ষিণ দিকে দুইটি প্রবেশ পথ রয়েছে। আয়তাকার প্রাঙ্গণ ঘিরে নির্মিত বড় কাটরার কক্ষের সংখ্যা মোট বাইশটি। পূর্ব-পশ্চিম অংশের মাঝামাঝি তিনতলা সমান উচ্চতার ফটকের দুইপাশে দ্বিতল ঘরের সারি এবং দুইপ্রান্তে আটকোণা দুইটি বুরুজ রয়েছে।

কথিত আছে, শাহজাদা শাহ সুজার জন্য এই প্রাসাদটি নির্মাণের পর তাঁর পছন্দ না হওয়ার কারণে স্থপতি আবুল কাসেমকে শর্ত সাপেক্ষ্যে ব্যবহার করার জন্য দিয়ে দেন। শর্ত ছিলো যে দানকৃত ওয়াকফ ইমারতের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ কোন অবস্থাতেই ব্যবহারের জন্য অনুমতিপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির কাছ থেকে কোন প্রকার ভাড়া বা অর্থ নিতে পারবে না। তাই বাইশটি দোকানির নিকট ওয়াকফ করা দোকান বড় কাটরার খরচ নির্বাহের জন্য দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ধ্বংসপ্রায় বড় কাটরা ইমারতকে সংরক্ষণ ও সংস্কারের জন্য অধিগ্রহণ করতে চাইলেও মালিকদের বাধার কারণে তা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে এটি হোসাইনিয়া আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার তত্ত্বাবধানে রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত বড় কাটরা দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে।

কিভাবে যাবেন

রাজধানী ঢাকা শহরের যেকোন জায়গা হতে পুরান ঢাকা (Old Dhaka) এসে রিক্সা নিয়ে চকবাজারের দক্ষিণে বাবুবাজার এলাকায় অবস্থিত বড় কাটরায় যাওয়া যায়। বড় কাটরা থেকে ছোট কাটরার দূরত্ব মাত্র ১৮৩ মিটার।

আশেপাশের দর্শনীয় স্থান

বড় কাটরার পাশেই ছোট কাটরার অবস্থান। এছাড়া কাছাকাছি দূরত্বে জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে আছে লালবাগ দুর্গ, তারা মসজিদ, শোয়ারী ঘাট, আর্মেনিয়ান চার্চ, সদরঘাট লঞ্চ ঘাট, আহসান মঞ্জিল সহ আরও অনেক স্থাপনা।

ফিচার ইমেজ: আসিফ আনাম সিদ্দিকী

ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে

ম্যাপে বড় কাটরা

শেয়ার করুন সবার সাথে

ভ্রমণ গাইড টিম সব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানান অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ পাতায় যোগাযোগ করুন।
দৃষ্টি আকর্ষণ : যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই ভ্রমণ গাইডে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ও নানা রকম যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যে ভ্রমণ গাইড দায়ী থাকবে না।