বীরশ্রেষ্ট নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল জেলার মহিষখোলা গ্রামে (বর্তমান নূর মোহাম্মদ গ্রাম) জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহণের লক্ষ্যে যশোর অঞ্চলের ৮ নং সেক্টরে যোগদান করেন। এই মহান বীরের দেশপ্রেম ও বীরত্বে পরবর্তী প্রজন্মকে উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে নড়াইলের চণ্ডিবরপুর ইউনিয়নের নুর মোহাম্মদনগরে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হয়েছে।
১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর নূর মোহাম্মদের নেতৃত্বে পাঁচ জনের একটি স্ট্যান্ডিং পেট্রোলিং টিমকে সুতিপুরের গোয়ালহাটি গ্রামে পাঠানো হয়। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে পাকিস্থানি সেনাবাহিনী পেট্রোলটিকে ঘিরে ফেলে ও ভারি গোলাবর্ষণ করতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধারা পেট্রোলটিকে উদ্ধার করতে চেষ্টা করতে থাকেন। বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শত্রুদের গুলিতে আহত সিপাহী নান্নু মিয়াকে কাঁধে নিয়ে শত্রুপক্ষকে মোকাবেলা করতে থাকেন। একসময় শত্রুপক্ষের মর্টারের আঘাতে তিনি মারাত্মক ভাবে আহত হন। আহত অবস্থায় নূর মোহাম্মদ সহযোদ্ধাদের নিরাপদ অবস্থানে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত একা রাইফেল চালিয়ে যান। আহত নূর মোহাম্মদ হানাদার বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন এবং তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
পরবর্তীতে তাঁর সহযোদ্ধারা যুদ্ধক্ষেত্রের পাশের এক ঝোপ থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী যশোরের কাশীপুরে তাঁকে সমাহিত করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর স্বাধীনতা যুদ্ধে নূর মোহাম্মদের অপরিসীম বীরত্ব, সাহসিকতা ও দেশ প্রেমের স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাঁকে রাষ্ট্রীয় ভাবে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধীতে ভূষিত করেন। তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে বাংলাদেশ সরকার তাঁর জন্মস্থানে একটি ট্রাস্ট এবং বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর (Birshreshtha Shaheed Noor Mohammad Sheikh Library & Memorial Museum) গড়ে তুলেছে।
সময়সীমা
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ কমপ্লেক্স সরকারী ছুটির দিন ব্যতিত প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বাসে চড়ে পাটুরিয়া কিংবা মাওয়া হয়ে নড়াইল জেলায় যাওয়া যায়। ঢাকার গাবতলী, সায়েদাবাদ, নবিনগর ও মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ঈগল পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ ও এ কে ট্রাভেলস এর বাসে করে নড়াইল যেতে জনপ্রতি ৪৫০-৫০০ টাকা ভাড়া লাগবে। নড়াইল জেলা শহর পৌঁছে স্থানীয় যানবাহনে বাঁধা ঘাট যেতে পারবেন। নড়াইল সদর থেকে অটো রিকাশায় চন্ডিবরপুর হয়ে নূর মোহাম্মদ গ্রামে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
নড়াইলে রাত্রি যাপনের জন্য ডলফিন, সম্রাট, মর্ডান, অরুনিমা রিসোর্ট, চিত্রা রিসোর্টের মতো বেশ কিছু আবাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।
কোথায় খাবেন
ফ্রেন্ডস ক্যাফে, মধুর ক্যান্টিন, সোনারগাঁও হোটেল এবং ফরহাদ ফুড ভিলজ সহ নড়াইলে বিভিন্ন মানের খাবার রেস্টুরেন্ট রয়েছে।
ফিচার ইমেজ: মিলন হোসেন মোল্লা
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।