ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বেথুলি গ্রামের মল্লিকপুরে ৫২টি বিভিন্ন আকারের বটগাছের রুপে প্রায় ১১ একর জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে ঐতিহাসিক এক বটগাছের অস্তিত্ব। বটগাছের আনুমানিক উচ্চতা ২৫০ থেকে ৩০০ ফুট। বিবিসির জরিপে মল্লিকপুরের বটগাছটি ১৯৮৪ সালে এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম বটগাছের (Big Banian Tree in Asia) খ্যাতি অর্জন করে। বটগাছটির ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি নাম রয়েছে, যার মধ্যে সুইতলার বটগাছ, সুইতলা মল্লিকপুরের বটগাছ এবং বেথুলীর বটগাছ নাম অধিক প্রচলিত।

বটগাছটির বয়স সম্পর্কে স্থানীয়দের কাছে সঠিক কোন তথ্য নেই। ধারণা করা হয় প্রায় তিনশ বছর আগে বেথুলি গ্রাম কুমার সম্প্রদায়ের বসবাসের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। তৎকালীন সময়ে কুমার সম্প্রদায়ের লোকেদের মধ্যে পাতকুয়া ব্যবহারের প্রচলন ছিল। সেন বংশীয় কুমার পরিবারের কোন এক পাতকুয়ায় একটি বটগাছ জন্ম নেয়। যা থেকে আজকের এই বর্তমান বটগাছের রুপান্তর।

বটগাছের সৌন্দর্য, বটগাছকে ঘিরে চারপাশের শান্ত পরিবেশ, পাখির কলরব আগত দর্শনার্থীদের তৃপ্ত করে। ২০০৯ সাল থেকে সামাজিক বন বিভাগ মল্লিকপুরের এই বটগাছটির রক্ষণাবেক্ষণ করে চলেছে।

কিভাবে যাবেন

রাজধানী ঢাকার গাবতলী থেকে রয়েল, জেআর, সোনার তরী, চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স এবং এসবি পরিবহনের এসি/নন-এসি বাসে চড়ে ঝিনাইদহ যাওয়া যায়। এসি/নন-এসি বাসের টিকেটের মূল্য জনপ্রতি ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা।

ঝিনাইদহ শহর হতে মল্লিকপুরের বটগাছটির দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। ঝিনাইদহ সদর থেকে বাসে কালিগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড এসে অটোরিকশা কিংবা সিএনজি নিয়ে সুইতলা মল্লিকপুর গ্রামে অবস্থিত ঐতিহাসিক বটগাছ দেখতে যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন

কালিগঞ্জে নলডাঙ্গা রাজবাড়ি রিসোর্ট সহ বেশকিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। এছাড়া ঝিনাইদহে থাকার জন্য বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। এদের মধ্যে হোটেল ড্রীম ইন্টারন্যাশনালের এসি/নন-এসি রুমে প্রতি রাত থাকতে ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকা খরচ করতে হবে। আর হোটেল কুটুমে থাকতে গুনতে হবে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা।

কি খাবেন

ঝিনাইদহ থেকে কালিগঞ্জ হয়ে মল্লিকপুর যাওয়ার পথে ধানসিঁড়ি, সবুজ বাংলা রেস্টুরেন্ট, রয় সুইটস সহ বেশ কয়েকটি খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট পাবেন। এছাড়া ঝিনাইদহ শহরে আহার, ফুড সাফারী, সুইট, ঘরোয়া ইত্যাদি রেস্টুরেন্টে প্রয়োজনীয় খাবার গ্রহণের পাশাপাশি ঘোষ-এর মিষ্টি, পায়রা চত্ত্বরের ছানা ও ছানার জিলাপী খেয়ে দেখতে পারেন।

ফিচার ইমেজ: শেখ শরিফুল ইসলাম

ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে

ম্যাপে মল্লিকপুরের বটগাছ

শেয়ার করুন সবার সাথে

ভ্রমণ গাইড টিম সব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানান অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ পাতায় যোগাযোগ করুন।
দৃষ্টি আকর্ষণ : যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই ভ্রমণ গাইডে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ও নানা রকম যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যে ভ্রমণ গাইড দায়ী থাকবে না।