কুমিল্লা জেলা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে কোটবাড়িতে অবস্থিত বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী বা বার্ড (Bangladesh Academy for Rural Development, BARD) একটি স্বায়ত্ত্বশাসিত গবেষণা ও প্রশিক্ষণ একাডেমী। ১৯৫৯ সালের ২৭ মে পল্লী উন্নয়নের লক্ষ্যে তৎকালীন সরকার কর্তৃক পাকিস্থান গ্রাম উন্নয়ন একাডেমি নামে যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে পল্লী গবেষক ড. আখতার হামিদ খান বার্ড নামকরণ করেন। প্রায় ১৫৬ একর ছায়া সুনিবিড় প্রাকৃতিক পরিবেশে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর অবস্থান। বিভিন্ন ধরনের গাছ-গাছালি ও ফুলের বাগান রয়েছে একাডেমীর চারপাশে। এছাড়া বার্ডের বিশাল কমপ্লেক্সের মধ্যে রয়েছে পাঁচটি হোস্টেল, চারটি কনফারেন্স রুম, মসজিদ, লাইব্রেরী, হেলথ ক্লিনিক, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, দুইটি ক্যাফেটেরিয়া ও একটি প্রাইমারী স্কুল। স্বায়ত্ত্বশাসিত এই প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তাদের ট্রেনিং প্রোগ্রাম পরিচালনা করার পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের আয়োজন হয়ে থাকে। আর বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে এখানে পিকনিক আয়োজনের যাবতীয় সু-ব্যবস্থা রয়েছে।  

প্রতিষ্ঠালগ্ন হতেই বার্ড বিভিন্ন গবেষণা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গ্রামীণ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পল্লী উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে। ১৯৬০ সালে গ্রামীণ উন্নয়নের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক ভাবে কুমিল্লা মডেলকে উন্নয়নশীল দেশের সামনে তুলে ধরার মাধ্যমে বার্ড বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হয়েছিল।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে ট্রেন ও বাস এই দুই উপায়ে কুমিল্লা যাওয়া যায়। ঢাকাস্থ কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে মহানগর গোধূলী, উপকূল এক্সপ্রেস, পাহারিকা এক্সপ্রেস ও তূর্ণা প্রভৃতি ট্রেনে কুমিল্লায় আসতে পারবেন। আর সড়কপথে ঢাকার সায়েদাবাদ বা কমলাপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে রয়্যাল কোচ, এশিয়া এয়ারকন, বিআরটিসি, প্রিন্স, এশিয়া লাইন, তৃষা পরিবহণের এসি/নন-এসি বাসে কুমিল্লা পৌঁছাতে পারবেন। কুমিল্লার কোটবাড়ি বাস স্ট্যান্ড হতে পায়ে হাঁটার দূরত্বে বার্ডের অবস্থান।

কোথায় থাকবেন

কুমিল্লার কান্দিরপাড়, শাসনগাছা ও ষ্টেশন রোডে হোটেল ভিক্টোরিয়া, আমানিয়া রেস্ট হাউজ, হোটেল ড্রিম ল্যান্ড, মাসুম রেস্ট হাউজ, হোটেল মেলোডি, হোটেল নূর, হোটেল সোনালি প্রভৃতি নামের বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে।

কোথায় খাবেন

বার্ডের ভিতরে দুইটি ক্যাফেটেরিয়া রয়েছে। এছাড়া কুমিল্লা শহরে ইরিশ হিল হাইওয়ে হোটেল, সৌদিয়া হোটেল, ঝাল বাংলা রেস্তোরা, হোটেল ময়নামতি, উজান হাইওয়ে, আনোয়ার হোটেল, সাকিব হোটেল ও লিজা হোটেল সহ ভালমানের রেস্তোরা রয়েছে। আর সুযোগ থাকলে কুমিল্লার মনোহরপুরের মাতৃভাণ্ডারের বিখ্যাত রসমালাই ও রসগোল্লা, ভগবতীর পেড়া এবং মিঠাই এর মালাই চপ ও মাতৃভূমির মালাইকারির স্বাদ নিতে অবশ্যই চেষ্টা করবেন।

কুমিল্লা জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

কুমিল্লার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি, ময়নামতি জাদুঘর, শালবন বৌদ্ধ বিহার, নব শালবন বিহার, আনন্দ বিহার, রাণী ময়নামতির প্রাসাদ, ফান টাউন পার্ক, ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক, ধর্মসাগর দীঘি ও রূপবান মুড়া উল্লেখযোগ্য।

ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে

ম্যাপে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী

শেয়ার করুন সবার সাথে

ভ্রমণ গাইড টিম সব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানান অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ পাতায় যোগাযোগ করুন।
দৃষ্টি আকর্ষণ : যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই ভ্রমণ গাইডে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ও নানা রকম যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যে ভ্রমণ গাইড দায়ী থাকবে না।