কুমিল্লা জেলা সদরের কোটবাড়ির ময়নামতিতে অবস্থিত বাংলাদেশের প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য আনন্দ বিহার (Ananda Bihara)। ময়নামতির অন্যান্য স্থাপনাগুলোর মধ্যে বৃহত্তম এই মন্দির উপমহাদেশের শেষ বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। নকশা করা বর্গাকৃতির বিশাল বিহার কাঠামোর কেন্দ্রে রয়েছে কেন্দ্রীয় মন্দির ও সুন্দর এক দিঘি। মন্দিরকে ঘিরে কাঠামোর প্রতিটি বাহুতে রয়েছে সন্ন্যাসীদের কক্ষ। বিস্তৃত আঙ্গিনার মাঝে অবস্থিত মন্দিরের উত্তর দিকের মধ্য ভাগে রয়েছে বিহারে প্রবেশ করার একমাত্র প্রবেশ দ্বার। আর বিহার হতে উদ্ধারকৃত বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে ৬৩ টি রৌপ্য মুদ্রা, তাম্রশাসন, ব্রোঞ্জ মূর্তি, পোড়ামাটির ভাস্কর্য ফলক ও মৃৎ পাত্র পোড়ানোর কাজে ব্যবহৃত ভাঁটি উল্লেখযোগ্য।
সপ্তম বা অষ্টম শতাব্দীর প্রথম দিকে দেব রাজবংশের তৃতীয় শাসক শ্রী আনন্দ দেব আনন্দ বিহার নির্মাণ করেন। ধারনা করা হয় সপ্তম শতকের শেষ দিকে সমতটের রাজধানী ছিল আনন্দ বিহার। পরবর্তীতে ১৯৪৪-৪৫ খ্রিস্টাব্দে আনন্দ বিহারের খনন কাজ করার লক্ষ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি গোচরে আনা হয়। বর্তমানে শুধু মন্দিরের দক্ষিন দিকের খনন কাজ শেষ হয়েছে এখনো বিহারের অধিকাংশ খনন করা বাকি রয়েছে।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে কুমিল্লা যাওয়ার জন্য ট্রেন ও বাস সার্ভিস আছে। রেল পথে মহানগর গোধূলী, উপকূল এক্সপ্রেস, পাহারিকা এক্সপ্রেস ও তূর্ণা এর মতো ট্রেনে ঢাকা থেকে কুমিল্লা যাওয়া যায়।
সড়কপথে কুমিল্লা যাওয়ার জন্য রয়্যাল কোচ, এশিয়া এয়ারকন, প্রিন্স, এশিয়া লাইন, তৃষা এর মতো নন এসি বা এসি বাস সার্ভিস আছে। বাসভেদে ভাড়া পড়বে ১৭০ থেকে ৩০০ টাকা। অথবা চট্টগ্রাম বা ফেনিগামী যেকোনো বাসে উঠলেও কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত যেতে পারবেন।
কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের ভিতর দিয়ে বা কোটবাড়ি বিশ্বরোড থেকে সি এনজি বা টেম্পু থেকে কোটবাড়ির আনন্দ বিহার যেতে পারবেন। কুমিল্লা শহর থেকে আনন্দ বিহার যাওয়ার ক্ষেত্রে টমছমব্রিজ চৌমোহনি থেকে সিএনজিতে কোটবাড়ি নেমে অটো বা রিক্সায় যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
কুমিল্লায় রাত্রি যাপনের জন্য কান্দিরপাড়, শাসনগাছা ও ষ্টেশন রোডে বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে। যেমন- হোটেল ভিক্টোরিয়া আবাসিক, আমানিয়া রেস্ট হাউজ, হোটেল ড্রিম ল্যান্ড, মাসুম রেস্ট হাউজ, হোটেল মেলোডি, হোটেল নূর, হোটেল সোনালি ইত্যাদি। এছাড়াও সরকারী কর্মকর্তাদের জন্য আছে সার্কিট হাউজ ও জেলা পরিষদের ডাক বাংলো।
কি খাবেন
কুমিল্লা শহরে বাস স্ট্যান্ড রোডে খাওয়ার জন্য বেশ কিছু রেস্তোরা আছে। আর মিষ্টি খাবারের মধ্যে কুমিল্লার মনোহরপুরের মাতৃভাণ্ডারের রসমালাই ও রসগোল্লা, ভগবতীর পেড়া, মিঠাই এর মালাই চপ ও মাতৃভূমির মালাইকারি প্রসিদ্ধ।
কুমিল্লার অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
কুমিল্লার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে ওয়ার সিমেট্রি, শালবন বিহার, ম্যাজিক প্যারাডাইস, বার্ড, ধর্ম সাগর ও নব বৌদ্ধ মন্দির উল্লেখযোগ্য।
ফিচার ইমেজ: বাংলাদেশের খবর
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।