মিতালী এক্সপ্রেস (Mitali Express) ট্রেন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পরিচালিত তৃতীয় যাত্রীবাহী ট্রেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শিলিগুড়ি (Siliguri) থেকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মধ্যে যাতায়াত করে থাকে। ২০২১ সালের ২৭শে মার্চ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে এই ট্রেন সার্ভিস চালু করা হয়। এই ট্রেন চালু হবার ফলে বাংলাদেশ থেকে পশ্চিম বঙ্গের জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান দার্জিলিং ভ্রমণ আরও সহজ হলো।
মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন রুট
মিতালী এক্সপ্রেস নিউ জলপাইগুড়ি থেকে হলদিবাড়ি হয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের চিলাহাটি, নীলফামারী, পার্বতীপুর, হিলি, নাটোর, ঈশ্বরদী আর টাঙ্গাইল হয়ে ঢাকায় এসে পৌঁছায়। পুনরায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে ষ্টেশন হতে যাত্রা শুরু করে পার্বতীপুর এবং চিলাহাটিতে যেয়ে থামে। তারপর সীমান্ত অতিক্রম করে হলদিবাড়ি যায়। ঢাকা ও চিলাহাটির মধ্যে দূরত্ব ৪৫৩ কিলোমিটার এবং চিলাহাটি ও নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে দূরত্ব ৭১ কিলোমিটার। চিলাহাটিতে যাওয়ার পর ভারতে ভ্রমণকারী যাত্রীদের জন্য ট্রেনটিতে দুটি অতিরিক্ত কোচ যুক্ত করা হয়। তারপর ট্রেনটি বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারত যায় এবং নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশনে পৌঁছানোর আগে ট্রেনটি হলদিবাড়িতে একবার থামে।
মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী
সপ্তাহে দুই দিন মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন (Mitali Express Train) বাংলাদেশ এবং ভারত উভয় দেশ থেকে চলাচল করবে। রবিবার ও বুধবার নিউ জলপাইগুঁড়ি থেকে এবং সোমবার ও বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ থেকে ট্রেনটি যাত্রা করবে। ট্রেনটিতে মোট ৮টি যাত্রীবাহী কোচ আছে; যার মধ্যে চারটি কেবিন কোচ ও চারটি এসি চেয়ার কোচ। ট্রেনটিতে চিলাহাটি স্টেশনের জন্য দুটি পৃথক কোচ বরাদ্দ আছে। চিলাহাটি স্টেশনে ট্রেনটি ৩০ মিনিট যাত্রা বিরতি করবে।
যাত্রার স্টেশন | ছাড়ার সময় | গন্তব্য স্টেশন | পৌছায় |
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশন | রাত ০৯ঃ৫০ মিনিট (বাংলাদেশ সময়) | নিউ জলপাইগুড়ি | সকাল ০৭ঃ১৫ মিনিট (ইন্ডিয়ান সময়) |
নিউ জলপাইগুড়ি | সকাল ১১ঃ৪৫ মিনিট (ইন্ডিয়ান সময়) | ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশন | রাত ১০ঃ৩০ মিনিট (বাংলাদেশ সময়) |
মনে রাখা জরুরী ইমিগ্রেশনের জন্য অবশ্যই আপনাকে বেশকিছু সময় আগে ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে ষ্টেশন পৌঁছাতে হবে। ওয়েটিং লাউঞ্জ থেকে বহিগমন কার্ড সংগ্রহ ও পুরণ করে মূল ইমিগ্রেশন শেষ হলেই কেবলমাত্র ষ্টেশনের প্লাটফরমে যেতে পারবেন।
মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকেট ভাড়া
মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনে এসি বার্থ, এসি সিট এবং এসি চেয়ার এই তিন ধরণের আসন ব্যবস্থা রয়েছে। প্রত্যেক টিকেটের ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা ট্রাভেল ট্যাক্স প্রদান বাধ্যতামূলক।
ট্রাভেল ট্যাক্স সহ ভাড়া
এসি বার্থ | এসি সিট | এসি চেয়ার |
৫,৬১০ টাকা | ৩,৬৮৫ টাকা | ২,৯৫৫ টাকা |
এছাড়া ১ থেকে ৫ বছরের শিশুদের জন্য টিকেট মূল্যের উপর ৫০% ছাড়ের ব্যবস্থা আছে। বয়স নির্ধারণের ক্ষেত্রে পাসপোর্টে উল্লেখিত জন্ম সাল ধরা হয়।
টিকেট কোথায় পাবেন
মিতালী এক্সপ্রেসের টিকিট কাটার জন্য বৈধ ভিসা এবং পাসপোর্ট লাগবে। বাংলাদেশের ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশন এবং ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি রেলস্টেশন থেকে টিকিট পাওয়া যাবে।
কখন ও কিভাবে টিকিট কাটবেন
নিয়ম অনুযায়ী ভারতীয় হাইকমিশন থেকে ভিসা নিয়ে অন্তত এক মাস আগে ট্রেনের টিকেট নিশ্চিত করে ভ্রমণ করতে পারবেন। সাধারণত যাত্রার ৩০ দিন আগে থেকে অগ্রিম টিকিট কাটা যায়।
ট্রেনের টিকেট কাটার সময় যাত্রীকে অবশ্যই পাসপোর্ট সাথে নিতে যেতে হবে। সেই সাথে যাত্রার দিন হতে নূন্যতম ৬ মাস পাসপোর্টের মেয়াদ থাকতে হবে। একজন একসাথে ৩ টি টিকেট ক্রয় করতে পারবেন এবং অন্য যাত্রীদের অবশ্যই পাসপোর্ট সহযোগে টিকেট বুকিং-এর সময় স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে।
ট্রেনে মালামাল পরিবহণের নিয়ম
প্রতি পূর্ণবয়স্ক যাত্রী সর্বোচ্চ ৩০ কেজি ওজনের লাগেজ বিনামূল্যে সাথে পরিবহণ করতে পারবেন। আর শিশুদের ক্ষেত্রে ২০ কেজি পর্যন্ত ফ্রি লাগেজ নেয়া যায়।
৩০ কেজির ওজনের বেশী লাগেজ নিতে গেলে আপনাকে নির্দিষ্ট হারে এক্সট্রা ফি প্রদান করতে হবে। ৩১ থেকে ৫০ কেজি ওজনের লাগেজের ক্ষেত্রে কেজি প্রতি এক্সট্রা ফির পরিমাণ ২ ডলার এবং ৫০ কেজির উপর কেজি প্রতি এক্সট্রা ফি ১০ ডলার।
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।