সুখী মানুষের দেশ ভুটান (Bhutan)। ছোট বড় পাহাড়, ঝর্ণা ও সবুজ অরণ্য মিলিয়ে অপূর্ব প্রাকৃতিক নিঃস্বর্গ ছড়িয়ে আছে সমগ্র ভুটান জুড়ে। পাহাড়ি আঁকা বাঁকা রাস্তা ও ঠাণ্ডা হিমেল মনোমুগ্ধকর পরিবেশের কারণে পর্যটকদের মনে ভুটানের জন্য আছে বিশেষ দূর্বলতা। প্রতি বছর তাই হাজার হাজার পর্যটক পাড়ি জমায় ভুটানের রূপে বুঁদ হওয়ার উদ্দেশ্যে।
বাংলাদেশ থেকে ভূটান ভ্রমনের উপায়
ভুটান যাওয়া যায় দুইভাবে। প্রথম উপায় হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে বিমানে সরাসরি ভুটানে। আরেকটি উপায় হচ্ছে বাই রোড বা সড়ক পথে। বাংলাদেশ এবং ভুটানের মধ্যকার দূরত্ব কম হওয়ায় সড়ক পথেও ভুটান যাওয়া যায়। তবে সড়ক পথে যেতে হলে ভারত হয়ে তারপর ভুটানে যেতে হয়। এজন্য ভারতের ট্রানজিট ভিসা সংগ্রহ করতে হয়। সড়ক পথে ঢাকা থেকে ভুটান যেতে প্রায় একদিন সময় লাগে। তবে সড়ক পথে যাওয়া আসা করলে ভ্রমণ খরচ ও কমে যায়।
ভুটান ভিসা প্রসেসিং
ভুটান যাবার জন্যে বাংলাদেশীদের আগে থেকে কোন ভিসার প্রয়োজন দরকার হয়না। যেভাবেই ভুটান যান ইমিগ্রেশনে অন এরাইভাল ভিসা নিতে পারবেন। ভুটানের ইমিগ্রেশনে পাসপোর্ট দেখালে কোন ঝামেলা ছাড়াই খুব সহজেই ভিসা/এন্ট্রি পারমিটের অনুমতি পেয়ে যাবেন।
এক্ষেত্রে মনে রাখা জরুরী ভুটানের ইমিগ্রেশনে আপনাকে প্রথমে ৭ দিনের পারমিট দেয়া হবে। এই অনুমতি নিয়ে ভুটানের রাজধানী থিম্পু (Thimphu) ও পারো (Paro) ঘুরতে পারবেন। আর ভূটানের অন্য কোন জায়গা ভ্রমণ করতে চাইলে কিংবা ৭ দিনের বেশি অবস্থান করতে হলে থিম্পু ইমিগ্রেশন অফিস থেকে আলাদা করে পারমিট নিতে হবে।

ভুটানের অন এরাইভাল ভিসার জন্য যা লাগবে
ভুটানের অন এরাইভাল ভিসার জন্যে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র লাগবে। ইমিগ্রেশনে দাড়াবার আগেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো নিয়ে নিবেন। যা যা লাগবে –
- ভুটানে প্রবেশের দিন থেকে কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদের পাসপোর্ট
- পাসপোর্টের ইনফরমেশন পৃষ্টার ১ কপি ফটোকপি
- ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- হোটেল বুকিং এর কাগজ
- আপনার পূরণকৃত এন্ট্রি পারমিট ফরম
এন্ট্রি পারমিট ফর্ম বিমানে গেলে বিমানে উঠলেই দিয়ে দিবে অথবা যে ইমিগ্রেশন কাউন্টারে আছেন সেখানে বললেই দিয়ে দিবে। ফর্মে উল্লেখিত তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করে নিতে হবে। কোন কিছু বুঝতে সমস্যা হলে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই হেল্প করবে।
আরও পড়ুন : ভুটান ট্যুর প্ল্যান
ভুটানের ভিসা ফি
বাংলাদেশিদের জন্য ভূটান ভ্রমণের ভিসা পেতে কোন ফি প্রদান করতে হয় না।
বাই রোড ভুটান ভ্রমণে ভারতের ট্রানজিট ভিসা
ট্রানজিট ভিসা হচ্ছে কোন দেশের উপর দিয়ে বা ভূ-খন্ড ব্যবহার করে অন্য দেশে ভ্রমণ করার অনুমতি পত্র। বাংলাদেশ হতে সড়ক পথে ভুটান যাবার জন্য ভারত হয়ে যেতে হবে। তাই বাই রোডে ভুটান ভ্রমণ করতে হলে ভারতের ট্রানজিট ভিসা নিতে হয়।
ভারত ভ্রমণ ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই ট্রানজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। এক্ষেত্রে ১ থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যে ১৫ থেকে ৩০ দিন মেয়াদী ট্রানজিট ভিসা প্রদান করা হয়।
ভারতের ট্রানজিট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- সর্বনিন্ম ৬ মাস মেয়াদের পাসপোর্ট ও তার ফটোকপি
- পূর্বে ভারত ভ্রমণ করে থাকলে সেই ভিসার ফটোকপি।
- পুরাতন পাসপোর্ট থাকলে সেটা জমা দিতে হবে। যদি পুরাতন পাসপোর্ট হারিয়ে গিয়ে থাকে তবে জিডি কপি জমা দিতে হবে
- অনলাইনে পূরণকৃত ভারতের ভিসা ফর্মের প্রিন্ট কপি (ভিসা ফর্ম পুরণের ক্ষেত্রে ভিসা টাইপ দিবেন ট্রানজিট এবং পোর্ট দিবেন বাই রোড চ্যাংরাবান্ধা/জঁয়গাও)
- সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে তোলা দুই ইঞ্চি বাই দুই ইঞ্চি ছবি
- ঢাকা থেকে বাসে যাওয়া ও আসার টিকেটের কপি
- ভুটানে হোটেল বুকিং এর প্রমাণসরূপ ডকুমেন্ট
- ন্যাশনাল আইডি কার্ড অথবা জন্মসনদের ফটোকপি
- বর্তমান ঠিকানার সাম্প্রতিক বিদ্যুৎ বা গ্যাস বিল
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট অথবা ডলার এন্ড্রোস-এর কপি লাগবে
- চাকরিজীবিদের এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট), ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স এবং ছাত্রছাত্রীদের আইডি কার্ডের ফটোকপি জমা দিতে হবে।
ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।